সীমান্ত হত্যার বিষয়ে বিজিবি প্রতিবাদ জানিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদফাইল ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

বিএসএফের গুলিতে সম্প্রতি লালমনিরহাট ও নওগাঁয় দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো ও সীমান্ত বৈঠক হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান।

২৫ মার্চ লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ নওগাঁ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, সেখানে (লালমনিরহাট) কিছু বাংলাদেশি কাঁটাতারের বেড়া কেটে ওপারে যান। বিএসএফের ভাষ্য হচ্ছে, তারা যখন তাঁদের চ্যালেঞ্জ করে, তখন তাঁরা (বাংলাদেশিরা) সংখ্যায় অনেক ছিল এবং তাঁরা বিএসএফ সদস্যদের ঘেরাও করেন। তখন বিএসএফ গুলি ছুড়লে দুজন আহত হন। তাঁদের একজন এ পাশে (বাংলাদেশের অভ্যন্তরে) চলে আসেন এবং অন্যজনকে ওপারে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে তিনি মারা যান।

হাছান মাহমুদ জানান, নওগাঁ সীমান্তে ২৬ মার্চ (ভারতে) অনুপ্রবেশের কারণে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে ও সীমান্ত বৈঠক হয়েছে।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমরা অনেক দিন ধরে আলাপ-আলোচনা করছি। আমি যখন সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়েছিলাম, তখনও গুরুত্বসহকারে বিষয়টি আলোচনা করেছি; যাতে সীমান্তে নন-লিথাল (প্রাণঘাতী নয়) অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। সে কারণে রাবার বুলেট বা ছররা গুলিতে অনেকে আহত হন ও বাংলাদেশে চলে আসেন।’

আরও পড়ুন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানাবে কি না, জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাই, সীমান্তে এ ধরনের কোনো ঘটনা যেন আর না ঘটে। সরকারের পক্ষ থেকে বিজিবির মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো ও সীমান্ত বৈঠক হয়েছে।’

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে বাংলাদেশি জিম্মিদের উদ্ধার করার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করতে আমরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য, জাহাজ ও নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার করা। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।’ জাহাজে খাদ্যসংকট নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে যে ইউনেসকো পুরস্কার দিয়েছে। আসলে এটি ইউনেসকোর কোনো পুরস্কার নয়, এটি আজারবাইজানের বাকুতে ইউনেসকো–সংশ্লিষ্ট একটি সম্মেলনে একজন ইসরায়েলি ভাস্কর পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেসকো কোনোভাবে জড়িত ছিল, কিন্তু কোনোভাবেই এ পুরস্কার ইউনেসকোর পক্ষ থেকে দেওয়া নয়। একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে সেখানে দেওয়া হয়েছে; যেটি ইউনেসকোর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে। এটি মিথ্যা, অপপ্রচার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

হাছান মাহমুদ বলেন, আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এটিই প্রথম নয়। তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু গাজায় আজ নির্বিচার মানুষ হত্যা করা হয়েছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এটি নিয়ে তিনি একটি শব্দ উচ্চারণ করেননি বা প্রতিবাদ করেননি।

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শ্রমিকদের সংকট নিরসনে দূতাবাসকে আলাপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে আমরা মালয়েশীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমাদের পরিকল্পনা আছে, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করার।’

ইইউর মালয়েশীয় পামওয়েল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে হাছান মাহমুদ জানান, পামওয়েল বিক্রি করার অনেক জায়গা আছে। এর জন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের অসুবিধা হবে না।