শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের সর্বাত্মক অবরোধ, স্লোগান
শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে সর্বাত্মক অবরোধ শুরু করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। আজ রোববার বেলা দুইটার পর থেকে ঢাকার শাহবাগে অবরোধ শুরু করেছে সংগঠনটি।
গতকাল রাতে দেশের সব বিভাগীয় শহরে এই সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দেয় ইনকিলাব মঞ্চ।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বেলা ২টা থেকে অবরোধ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টার মধ্যেই বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা শাহবাগ মোড়ে আসতে শুরু করেন। তাঁরা মোড়ের পাশে সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন।
বেলা দুইটার পর ইনকিলাব মঞ্চ শাহবাগ মোড় বন্ধ করে দেয়। এতে শাহবাগ দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, শাহবাগ মোড়ের মাঝখানে বসে আছেন নেতা-কর্মীরা। একটু পরপর স্লোগান দিচ্ছেন।
এ সময় মঞ্চের নেতা-কর্মীরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘যেই হাদি জনতার, সেই হাদি মরে না’, ‘হাদি না মোদি, হাদি হাদি’ স্লোগান দিচ্ছেন।
ওসমান হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে গত শুক্রবার দুপুর থেকে শাহবাগে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও যোগ দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুুল্লাহ আল জাবের আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেওয়ার পর তাঁরা এলাকা ছাড়েন।
সর্বাত্মক অবরোধ ঘোষণার আগে গতকাল রাত ১১টার দিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শাহবাগে আসেন। সেখানে আন্দোলনরত জনতার উদ্দেশে হাদি হত্যাকাণ্ডের অগ্রগতি তুলে ধরেন। ৭ জানুয়ারির মধ্যে হাদি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করার কথাও অঙ্গীকার করেন তাঁরা। তবে এই প্রতিশ্রুতি প্রত্যাখ্যান করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে ইনকিলাব মঞ্চ।
আজ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম জানান, শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও তাঁর সহযোগী আলমগীর শেখ ভারতে পালিয়েছেন।তাঁদের পালাতে সহযোগিতা করেছেন ভারতের দুই নাগরিক। মেঘালয় পুলিশ ওই দুই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে ডিএমপি জানায়।
ওসমান হাদি গত বছরের আগস্টে ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে সারা দেশে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী হতে প্রচারও চালাচ্ছিলেন তিনি। ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টন (বক্স কালভার্ট রোড) এলাকায় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।