বিকাশ অ্যাপে অনুদান সুবিধা, খাবার বিতরণের অনন্য উদ্যোগে আপনিও অংশ নিতে পারেন

বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সারা দেশ থেকে অনুদান দিতে পারছেন আগ্রহীরা। ছবি: সংগৃহীত বিকাশ অ্যাপে অনুদান সুবিধা, খাবার বিতরণের অনন্য উদ্যোগে আপনিও অংশ নিতে পারেন

এবারের রমজান, খরতাপের রমজান, চৈত্র-বৈশাখের রমজান। প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস শ্রমজীবী মানুষের। শ্রমজীবী এসব মানুষসহ সারা দেশের এক লাখ মানুষের কাছে ইফতারি ও সাহ্‌রির খাবার পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাস্তুল ফাউন্ডেশন। সারা দেশের অসংখ্য মানুষের অনুদানে এই কর্মযজ্ঞ সফল করতে কাজ করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। ইতিমধ্যে হাজারও মানুষের কাছে পৌঁছেছেন তাঁরা। খাবার নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার যাত্রায় দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো অঙ্কের অনুদান দিয়ে শামিল হতে পারছেন যে কেউ। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেই এতে অংশ নিতে পারছেন আগ্রহীরা।

কেবল মাস্তুল ফাউন্ডেশন ও অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে সাহ্‌রির খাবার, ইফতারি পৌঁছে দিচ্ছে প্রতিদিন। সামাজিক সংগঠনগুলোর খাবার পৌঁছে দেওয়ার এই উদ্যোগ খানিকটা স্বস্তি এনেছে লাখো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনে।

কোথাও খাবারের প্রাচুর্য আবার কোথাও সংকট। এই বৈষম্য দূর করে সবার কাছে নিশ্চিন্তে খাবার পৌঁছে দিতে সারা বছরই খাবার বিতরণে কাজ করছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। সারা দেশের বিভিন্ন সচ্ছল মানুষের ছোট–বড় অনুদান সংগ্রহ করে হাজারো মানুষের অন্নসংস্থান করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে এ সংগঠনগুলো। মহৎ এই উদ্যোগে অংশ নিতে কোথাও যেতে হয় না, কাউকে পাঠাতে হয় না বা বাড়তি কোনো সময়ও ব্যয় করতে হয় না।

নিয়মিত বিকাশ অ্যাপ থেকে বিভিন্ন সংগঠনে অনুদান দেন বনানীর শাহনাজ বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার সার্মথ্য অনুযায়ী আমি বিভিন্ন মানুষকে সাহায্য করি। এতে মানসিক শান্তি পাই। আমার ভালো লাগে। সংসার সামলে কোথাও গিয়ে সাহায্য দেওয়া আমার জন্য মুশকিল হয়। তাই বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে এসব অনুদান কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আমি মানসিক শান্তি খুঁজে পাই। প্রতিদিনের ব্যস্ততার মধ্যেও ভালো কাজে যুক্ত হতে পারার এই সুযোগ স্বস্তির।’

বিভিন্ন সংগঠনে অনুদান পৌঁছে দিতে বিকাশ অ্যাপের ‘অন্যান্য সেবাসমূহ’ অংশ থেকে ‘ডোনেশন’ আইকন নির্বাচন করতে হয়। যে প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দিতে চান, তা নির্বাচন করে নাম, ই-মেইল আইডি ও অনুদানের পরিমাণ দিয়ে সাবমিট করতে হয়। গ্রাহক চাইলে ‘পরিচয় দিতে অনিচ্ছুক’ অপশন নির্বাচন করে নিজের পরিচয় গোপনও রাখতে পারেন। পরের ধাপে পিন নম্বর দিয়ে অনুদান কার্যক্রম শেষ করার পর একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পেয়ে যান গ্রাহক।

এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করলেও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে। তাদের কাছেও এই মাধ্যম দিয়েই যেকোনো অঙ্কের অনুদান পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। বিকাশ অ্যাপের পাশাপাশি গ্রাহক https://www.bkash.com/products-services/donation ওয়েবসাইট থেকেও পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে অনুদান বিকাশ করতে পারেন এবং এই সেবার বিস্তারিত জানতে পারেন। এ ছাড়া গ্রাহক চাইলে সরাসরি আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন (১৪০৮৩০৪০৫০), মাস্তুল ফাউন্ডেশন (১৭৩০৪৮২২৭৮), প্রথম আলো ট্রাস্ট (১৭৩০৮১৫২৮০), অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন (১৭০১৬৬৬৩০৫), আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম (১৩১৮২৪২৯৯৯), সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (১৭২৯২৯৬২৯৬)-এ পেমেন্ট করে অনুদান পাঠিয়ে দিতে পারেন সহজেই।

এ প্রসঙ্গে বিকাশের চিফ কমিউনিকেশনস অফিসার মাহফুজ সাদিক বলেন, ‘একজন মানুষকে ইফতারি করাতে খরচ হচ্ছে ১০০ টাকার কম। একজন বিকাশ গ্রাহক তাঁর সামর্থ্য অনুসারে একজন বা কয়েকজনের ইফতারের জন্য অনুদান দিতে পারছেন বিকাশ অ্যাপ দিয়েই। আমরা বিকাশ অ্যাপকে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৈরি করেছি, যেখানে মুহূর্তেই দাতা আর গ্রহীতার সংযোগ স্থাপন হচ্ছে।

সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে অংশগ্রহণ করছেন সামর্থ্যবানেরা। বিকাশের ডোনেশন কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারণ করে ভালো কাজের সঙ্গে থাকব আমরা।’

উল্লেখ্য, বিশ্বের ৭৫টি দেশে কাজ করা ২৩৮টি উন্নয়নমূলক সংস্থার ভাষ্যমতে, বিশ্বে চরম ক্ষুধা নিয়ে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ৭১ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ মানুষ। সেই হিসেবে, প্রতি চার সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। এখনও সারা বিশ্বে ৮২ হাজার মানুষ রাতে না খেয়ে ঘুমায়। অন্যদিকে রাস্তার ধারে ডাস্টবিনগুলোয় বহু উচ্ছিষ্ট খাবার জমা হতে দেখা যায়। বিশ্বে উৎপাদিত খাবারের ১৩০ কোটি টন মানুষ নষ্ট করে, যা মোট উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ। প্রতিবছর পৃথিবীতে যে পরিমাণ খাবারের অপচয় হচ্ছে, তা দিয়ে ৮২ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগান দেওয়া সম্ভব বলছে জাতিসংঘ।

দেশব্যাপী সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে পথে পথে ঘুরে বেড়ায় ফুড ফর অল–খুকুমনি ফাউন্ডেশন, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনের মতো সংস্থার মানুষগুলো। তাঁদের উদ্যোগ আরও সফল করতে পারে গ্রাহকের দেওয়া অনুদান।