বিপুল ব্যয়ে নান্দনিক করা হচ্ছে ঘরের সাজসজ্জা, বাড়ছে বিপদের ঝুঁকি

ট্রেন্ড চলছে রাজকীয়ভাবে ঘর সাজানোরছবি: সংগৃহীত

আগে শুধু একটি বাড়ি করে মানুষ সন্তুষ্ট থাকলেও এখন সেই বাড়ি বা ফ্ল্যাট কত আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো যায়, তার প্রতিযোগিতা চলছে। ফলস সিলিং, ফলস ওয়াল, লাইট, ঘাসের মতো দেখতে গ্রাস কার্পেট কিংবা কাচ ব্যবহার করে আধুনিকতার ছোঁয়ায় অন্দরমহলের সাজসজ্জা চলছে।

দুর্যোগ, ভূমিকম্প, অগ্নিপ্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেন, এমন ব্যক্তিরা বলছেন, দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি আছে, এমন উপকরণ দিয়েই বেশির ভাগ গৃহসজ্জার কাজ চলছে। ঘরের সৌন্দর্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে মানুষ নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখছেন না। ফলে ঝুঁকির মাত্রা বাড়ছে।

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বহুতল ভবনে আগুন লাগার পর গৃহসজ্জার বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। সেমিনার, আলোচনাসহ বিভিন্ন জায়গায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, কৃত্রিম কাঠের বোর্ড, প্লাস্টিক শিট, বাহারি মেঝে, কেমিক্যালমিশ্রিত ফলস সিলিং ও এ ধরনের উপকরণ যত কম ব্যবহার করা হবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি তত কমবে।

গুলশানে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বহুতল ভবনে আগুন লাগার পর গৃহসজ্জার বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। দুর্যোগ, ভূমিকম্প, অগ্নিপ্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেন, এমন ব্যক্তিরা বলছেন, কৃত্রিম কাঠের বোর্ড, প্লাস্টিক শিট, বাহারি মেঝে, কেমিক্যালমিশ্রিত ফলস সিলিং ও এ ধরনের উপকরণ যত কম ব্যবহার করা হবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি তত কমবে।

বাজারে গৃহসজ্জার বিভিন্ন উপকরণ আছে, যাতে আগুন লাগলেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে না। আগুন নেভানোর সময়ও পাবেন মানুষ। তবে সেসব উপকরণের দাম বেশি। বেশির ভাগ মানুষ অজ্ঞতার কারণে ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে দামের কথা চিন্তা করে এসব পণ্য এড়িয়ে চলেন। স্থপতি, ইন্টেরিয়র ডিজাইনারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন এ কথা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ফলস সিলিং, ফলস ওয়াল, আর্টিফিশিয়াল কার্পেট, অতিরিক্ত আসবাব দিয়ে ঘর সাজানো এখন ফ্যাশন বা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। ভূমিকম্প হলে অথবা আগুন লাগলে এসব ঘরসজ্জার উপকরণ বাড়তি ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘গুলশানে আগুন লাগার পর সেখানে গিয়ে মনে হয়েছিল, আগুন এভাবে কেন জ্বলছে। পরে বুঝলাম, ভবনের ফ্ল্যাটগুলোর সাজসজ্জা এর একটা বড় কারণ হতে পারে। তাই সবাইকে বলি, নিজেকে ভালোবাসলে অর্থের অপচয় করে এভাবে ঝুঁকি বাড়াবেন না।’

দাহ্য পদার্থ মানেই পুরান ঢাকার বিভিন্ন ভবনে রাসায়নিক গুদামের কথা মনে হলেও নতুন ঢাকার অভিজাত এলাকার জন্যও ভিন্ন আঙ্গিকে দাহ্য পদার্থ ব্যবহারের বিষয়টি এখন সামনে আসছে।

গুলশানে আগুন লাগার পর সেখানে গিয়ে মনে হয়েছিল, আগুন এভাবে কেন জ্বলছে। পরে বুঝলাম, ভবনের ফ্ল্যাটগুলোর সাজসজ্জা এর একটা বড় কারণ হতে পারে। তাই সবাইকে বলি, নিজেকে ভালোবাসলে অর্থের অপচয় করে এভাবে ঝুঁকি বাড়াবেন না।
—মো. মিজানুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

গত বছরের ৩ আগস্ট প্রথম আলোয় বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দিলীপ কুমার সাহার একটি মতামত ছাপা হয়েছে। তাতে তিনি বলেন, পুরান ঢাকার ফ্ল্যাট, বাসাবাড়িতে অবৈধভাবে মজুত করা হয় রাসায়নিক পণ্য। পাশে থাকা ব্যক্তিও আন্দাজ করতে পারেন না যে তিনি দাহ্য বস্তুর সঙ্গে বসবাস করছেন। মার্কেট, জনবহুল বিপণিবিতানসহ প্রায় প্রতিটি বাড়ির নিচের বেজমেন্টের গুদামে রয়েছে অতি দাহ্য পদার্থ। গত ১২ বছরে পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডে ঝরেছে দুই শতাধিক প্রাণ।

অন্যদিকে ৯ মার্চ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গৃহসজ্জার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের দাহ্য বস্তুর ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

একাধিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনার জানান, ভবন বা ফ্ল্যাটমালিকের কাছে সৌন্দর্যটাই বেশি প্রাধান্য পায়। অনেকে জিনিস রাখার জায়গা না পেলে জানালা বন্ধ করে সেখানে ফলস দেয়াল বানিয়ে জিনিস রাখছেন। অনেকে আলমারি খুললে কাপড় দেখতে সুবিধা ও সুন্দর দেখানোর জন্য আলমারির ভেতরও লাইট লাগাচ্ছেন। একেকটা ফলস সিলিংয়ের নিচে অসংখ্য তার থাকে। আর ভবন বা ফ্ল্যাট তৈরির সময় বৈদ্যুতিক ও গ্যাস লাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দেওয়া হচ্ছে না।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৈদ্যুতিক গোলযোগের (নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে দুর্ঘটনা) কারণে ৮০ শতাংশ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে।

আর্কভিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী স্থপতি মেহেরুন ফারজানা ইন্টেরিয়র ডিজাইনার হিসেবেও কাজ করেন। বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব ১০ কারখানার ৮টি বাংলাদেশের। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) প্লাটিনাম লিড সনদ পাওয়া ফতুল্লা অ্যাপারেলস, প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেড ও মিথেলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড—তিনটিরই নকশা করছেন এ স্থপতি।

স্থপতি মেহেরুন ফারজানা এভাবে ঘর সাজিয়েছেন
ছবি: সংগৃহীত

কাজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মেহেরুন ফারজানা বললেন, ‘টাকা থাকলেও সবাই শিক্ষিত নন, রুচিশীল নন। ফেসবুক, ইউটিউব দেখে তাঁরা অনুপ্রাণিত হন ও ঠিক সেই রকম করেই বাসা সাজাতে চান। অন্যদিকে উপকরণ কেনার সময় অনেকেই সস্তা জিনিস চান। আমরা পড়াশোনা করে এ পেশায় এসেছি, অন্যদিকে বর্তমানে অনেক মিস্ত্রিও নিজেকে ডিজাইনার হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। কম খরচে কাজ করাতে যাঁরা চান, তাঁরা তাঁদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।’

এই স্থপতি বলেন, ঘর সাজানোর কিছু উপকরণ আছে, যেগুলো আগুন লাগলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে না। কিন্তু দাম বেশি বলে সেসব দিয়ে ঘর সাজাতে অনেকে অনীহা প্রকাশ করেন। আর ঘর সাজানোর ক্ষেত্রেও যে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, সেই জ্ঞানটুকুও অনেকের নেই।

ঘরের সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে জানিয়ে মেহেরুন ফারজানা বলেন, ঘরের পর্দার ওপর অনেকে চাঁদ–তারার আদলে যে লাইট পাওয়া যায়, তা দিয়ে ঘর সাজাচ্ছেন, বিশেষ করে বাচ্চার ঘর সাজাচ্ছেন এ সস্তা লাইট দিয়ে। অথচ এ সাজসজ্জার কারণেই যেকোনো সময় বড় অঘটন ঘটতে পারে। এসব ক্ষেত্রে শুধু নিজে সচেতন হলে হবে না, আশপাশের সবাইকে সচেতন করতে হবে। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এ চিন্তাই তো কেউ করছেন না।

কম আসবাব দিয়ে নিজের বাসা সাজিয়েছেন ও প্রাকৃতিক আলো–বাতাসের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছেন বলে জানান মেহেরুন ফারজানা।

মানুষ সচেতনও হচ্ছেন

স্নোট্যাক্স আউটওয়্যার লিমিটেড ও স্নোট্যাক্স স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের পরিচালক শরিফুন রেবা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কারখানাগুলো সবুজ কারখানা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে। তবে এটাও ঠিক, কারখানায় যতটুকু করা যায়, বাসায় ঠিক ততটা নিয়ম মেনে সবকিছু করা সম্ভব হয় না। আমি আমার বাসায় ফলস সিলিং খুব কম ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। সেন্ট্রাল এসির তার যাতে দেখা না যায় বা দৃষ্টিকটু না লাগে, সে জন্য ফলস সিলিং দেওয়া হয়েছে কিছু জায়গায়। বাসা খোলামেলা রাখার চেষ্টা করেছি।’

গৃহসজ্জার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টিকে তিনি সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়েছেন বলে জানান শরিফুন রেবা। তিনি বলেন, গ্যাস কোনো কারণে লিক (ছিদ্র) হলে তা যাতে আগে থেকেই বোঝা যায়, সেই ব্যবস্থা করা আছে। প্রতিটি ঘরের সামনে আগুন নেভানোর সিলিন্ডার রাখা আছে। এর মেয়াদ শেষ হলো কি না, তার নজরদারি নিজে করেন। বাসায় কাজের নতুন কোনো সহকারী এলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মেইন সুইচ কীভাবে বন্ধ করতে হয়, তা শেখানো হয়। তবে বাসায় সেই অর্থে কোনো মহড়ার আয়োজন করা হয় না, যা কারখানায় বাধ্যতামূলক।

অ্যাসথেটিক ইন্টেরিয়রসের প্রধান পরামর্শক ও ডিজাইনার সাবিহা কুমু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যখন কাজ করি, তখন লাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকি। কার্ড বোর্ড দিয়ে কভার করে পুরো বাসা সিলিং করি না। ঘরের মেইন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার সব সময় খোলা রাখি। আমি যাঁদের কাজ করি, তাঁরা বুঝদার ও রুচিশীল। ফলে ঝামেলা হয় না। আর আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে জবরজং ডিজাইনের প্রয়োজন হয় না; খুব সাধারণ জিনিসও অন্যভাবে উপস্থাপন করে চমক আনা যায়, সে বিষয়ে বুঝিয়ে বলি।’

ফলস সিলিং ব্যবহার প্রসঙ্গে সাবিহা কুমু বলেন, এটি ব্যবহারে ঘরের উচ্চতা কম দেখা যায়। তবে লাইটসহ বিভিন্ন জিনিসের ব্যবহার, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানোসহ বিভিন্ন কাজে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেকে বাসার পুরো দেয়ালও বোর্ড দিয়ে ঢেকে দেন। তবে এ ক্ষেত্রে বাড়ির মালিক ও ডিজাইনারের অজ্ঞতাও কাজ করে। ডিজাইনার গৃহসজ্জায় যত বেশি উপকরণ ব্যবহার করবেন, তত তাঁর লাভ হবেন। তাই অনেকেই এ কাজ করেন।

অনেকে বাসাকে এমনভাবে সাজাচ্ছেন, তাতে করে তা আর বাসা থাকছে না, হোটেল বা শোরুমের মতো হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ফাহমিদা লিনেটস ডিজাইন স্টুডিওর স্বত্বাধিকারী ফাহমিদা সেরাজ (লিনেট)। তিনি বলেন, অনেকে ঘরের জানালা পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে বলেন শুধু সৌন্দর্য রক্ষার জন্য। কেননা, জানালার জায়গায় ফলস দেয়াল বানিয়ে সেখানে বইয়ের তাক, আলমারিসহ অন্য জিনিস রাখছেন। ইন্টেরিয়র ডিজাইনে চাইলেই আমূল পরিবর্তন করে ফেলা যায় না, মূল ভবনের নকশাসহ অন্যান্য বিষয় মনে রাখতে হবে। বিষয়টি ভবন বা ফ্ল্যাটমালিককে বুঝিয়ে বলতে হবে।

গৃহসজ্জার পাশাপাশি নিরাপত্তায় গুরুত্ব দিতে হবে

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ঢাকা) দিনমনি শর্মা প্রথম আলোকে বলেন, ঘরের সাজসজ্জার উপকরণ থেকে আবাসিক ভবন বা অফিস–আদালতে আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে আগুন দ্রুত ছড়াবে না, এমন উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। ঘরের সৌন্দর্যের চেয়ে সবচেয়ে বড় কথা, ফায়ার সেফটি প্ল্যানসহ বিভিন্ন নিয়মনীতি মেনে ভবন তৈরি করতে হবে।

দিনমনি শর্মা বলেন, নিরাপত্তার বিষয়ে উদাসীন থাকায় মানুষ এসব বিষয়ে বিনিয়োগ করতে চান না। আগুন লেগে গেলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন যাওয়ার আগেই যাতে ভবনেরই প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদেরই এ প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। ভবনে আগুন নির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং ভবনের বাসিন্দাদের এর ব্যবহার জানতে হবে। বিষয়গুলো ছোটবেলা থেকেই শেখানোর ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। কেননা, শিশু বয়সে কিছু শিখলে তা মনে রাখা সহজ।

শরিফুন রেবা তাঁর ঘর সাজানোর পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছেন
ছবি: সংগৃহীত

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বারবার তাগাদা দিয়ে বলছেন, অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন, ২০০৩ ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ অনুযায়ী ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণের আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা প্রয়োগ করতে হবে। বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণের মহড়া করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। জরুরি বহির্গমন পথ, পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। অথচ প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের পর এ বিষয়গুলোতেই অবহেলার নজির পাওয়া যাচ্ছে।

মানুষের এমন উদাসীনতা প্রসঙ্গে দিনমনি শর্মা বলেন, আইন ও বিভিন্ন নীতিতে সব বলা আছে। তবে বেশির ভাগ মানুষ আইন মানতে চান না। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন তাঁরা। অনেকেই ভাবেন আইন না মানলেও পার পেয়ে যাবেন—বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে পার পাচ্ছেনও। ফলে সচেতন সমাজ গড়ে উঠছে না।