মামলা নিষ্পত্তিতে জটিলতা সমাধানে কাজ চলছে: প্রধান বিচারপতি
দেশের আদালতে ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এখন মামলা ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনগুলো ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। একই সঙ্গে মামলা নিষ্পত্তিতে যে জটিলতা বাড়ছে, তা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন জুডিশিয়ারি অ্যাক্রস দ্য বর্ডার্স (টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স ফ্রম দ্য হিমালয়াস অ্যান্ড বিয়ন্ড)’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। আজ শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের শেষ দিনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের শেষ দিনের প্রথম অধিবেশনে ওবায়দুল হাসান বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ‘পিপলস জুডিশিয়ারি’ এমন একটি ধারণা, যা সংখ্যালঘুসহ সব নাগরিকের সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে এবং সংবিধান অনুযায়ী তাঁদের অধিকারগুলো রক্ষা করে। এ সময় দেশের বিচারব্যবস্থা আধুনিকায়নে বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরার পাশাপাশি কক্সবাজারে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের সব অঙ্গপ্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করতে হবে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক অধিকার, আর্থসামাজিক অধিকার ও সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত করতে স্মার্ট বিচার বিভাগ অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্মার্ট বিচার বিভাগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তির সমন্বয় ও বিচারপ্রক্রিয়ার আধুনিকায়নের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও প্রবেশাধিকার বৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে শুধু বিচার প্রশাসনের উন্নতিই হবে না, বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থাও জোরদার হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভুটান হাইকোর্টের বিচারপতি লোবজাং রিনজিন ইয়ার্গে বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় আইনের শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের মূলভিত্তি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং আইনের অধীনে সবাই সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী—এই দুই গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি বাস্তবায়ন করা না হলে আইন ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচারের উৎস হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. জাকির হোসেন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য দেন।