শ্রদ্ধার ফুলে ভরে গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি

শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিছবি: মোশতাক আহমেদ

তপন দেবের বাসা রাজধানীর উত্তরায়। তাঁর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সুস্মিত দেবের ইচ্ছা মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসার এবং ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর।

ছেলের ইচ্ছা পূরণে আজ বুধবার ভোরে তাকে নিয়ে উত্তরা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন বাবা। সেখানেই কথা হয় বাবা-ছেলের সঙ্গে। সুস্মিত দেব বলল, অবশেষে তার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। সে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিবসটিতে হাজারো মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আজ প্রভাতফেরি করে শ্রদ্ধার ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

এর আগে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে ভাষাশহীদদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর মন্ত্রিসভার সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা জানান। তার পর থেকে সাধারণ মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন, যা এখনো চলছে।

এবার মহান শহীদ দিবসের ৭২তম বছর পূর্ণ হচ্ছে। মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা বাংলা মায়ের সাহসী সন্তানদের অনন্য আত্মত্যাগের এই দিনকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। তার পর থেকে সারা বিশ্বেই নিজ নিজ মাতৃভাষা নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির ভেতর দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে।

ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি হৃদয়ের নিখাদ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারা দেশের সব শহীদ মিনারে নেমেছে ছাত্র-জনতার ঢল। তাঁদের পোশাক ও সজ্জাতে শোকের কালো রং। কণ্ঠে সেই বেদনাবিধুর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…’।

আজ সরকারি ছুটির দিন। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।