চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দিনের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক তাঁর সম্পদ ও বেতন-ভাতার হিসাব তলব করেছে। এ ছাড়া প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দিনের দুই ভাইয়ের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য চেয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে এ নিয়ে একটি চিঠি দেন দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অংটি চৌধুরী। এতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য-উপাত্ত দুদকে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
জসীম উদ্দিনের বেতন–ভাতা ও সম্পদের বিবরণীসহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক অংটি চৌধুরী। তিনি বলেন, বিষয়টি এখনো অনুসন্ধানের পর্যায়ে আছে। সিটি করপোরেশন আনুষ্ঠানিকভাবে এর উত্তর দেবে।
জসীম উদ্দিন ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক পদের দায়িত্বে আছেন। এটি সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এতে খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম করে ফ্ল্যাট ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে বলে দুদকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত চেয়েছে দুদক। এর মধ্যে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত জসীম উদ্দিনকে কী পরিমাণ বেতন–বোনাস ও বিল দেওয়া হয়েছে, তার বিবরণী চেয়েছে দুদক। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনে জমা দেওয়া জসীম উদ্দিনের সম্পদ বিবরণীও চাওয়া হয়েছে দুদকের পক্ষ থেকে।
জসীম উদ্দিনের ভাই সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাহিম কনস্ট্রাকশন উন্নয়নকাজের যেসব কার্যাদেশ পেয়েছে, তার নথিপত্র এবং তাঁর আরেক ভাই দিদারুল ইসলামের মালিকানাধীন আমিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট থেকে মালামাল কেনার নথি চেয়েছে দুদুক।
জসীম উদ্দিন এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ফলে এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জসীম উদ্দিনের ব্যাপারে দুদকের চিঠি দেওয়ার বিষয়টি শুনেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো চিঠি এখনো পাননি তিনি। এ নিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।
দুদক থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুদক যেসব তথ্য–উপাত্ত চেয়েছে, তা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সংগ্রহ শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্য–উপাত্ত দুদকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।