১১ বছর পর ধরা পড়লেন পলাতক ফাঁসির আসামি

প্রতীকী ছবি

পুরান ঢাকার নবাবপুরে ১১ বছর আগে রজব আলী হত্যায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া পলাতক আসামি মো. জিকুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ওই হত্যাকাণ্ডের পর জিকু নাম-পরিচয় বদলে বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জিকুকে গ্রেপ্তার নিয়ে বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে র‌্যাব-৩–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর এলাকা থেকে জিকুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নিহত রজব ও জিকু ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁরা একসঙ্গে মাদক সেবন করতেন। একদিন মাদক সেবনের জন্য তাঁদের কাছে টাকা ছিল না। তখন রজব তাঁদের মাদক সেবনের সঙ্গী সজীবের মোবাইল ফোন জামানত হিসেবে রেখে মাদকের টাকা সংগ্রহ করেন। সেই টাকায় তাঁরা সবাই মাদক সেবন করেন। পরে টাকা পরিশোধ না করে ফোন ফেরত চাওয়ায় রজব ও জিকুর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে জিকুর নেতৃত্বে রহিম ওরফে আরিফ, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, মিলন ওরফে চোপা মিলন, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন, সজীব আহমেদ খান, শাহীন চান খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।

র‍্যাব জানায়, ২০১১ সালের ২৪ জুলাই রাতে নবাবপুরে একটি দোকানে মুঠোফোন রিচার্জ করতে গেলে জিকুসহ কয়েকজন রজবের বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। এ ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর পুলিশ ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০১৯ সালে জিকু, রহিম ওরফে আরিফ ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগারকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। অপর আসামিদের মধ্যে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়। আসামিরা সবাই তখন পলাতক ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হত্যার পর মাতুয়াইল এলাকায় একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন জিকু। দীর্ঘ আট মাস পলাতক থাকার পর তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ছয় মাস কারাগারে ছিলেন। জামিনে বের হওয়ার পর তিনি বরিশালে তাঁর শ্বশুরবাড়ি চলে যান। সেই থেকে তিনি আর আদালতে হাজিরা দেননি। সেখানে মোটর মেকানিক হিসেবে বিভিন্ন ওয়ার্কশপে কাজ করতে শুরু করেন। একসময় নাম বদলে নিজেকে নাসির উদ্দিন বলে পরিচয় দেন। কিছুদিন পর আবার ঢাকায় ফিরে আসেন এবং লম্বা চুল-দাড়ি রেখে ধোলাইখাল এলাকার একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।