ডিএমপিতে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর নির্দেশনা।

ডেঙ্গু মশা
ফাইল ছবি

রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরাও ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। গত দেড় মাসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ১১৪ জন সদস্য এতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন নারী সদস্যসহ দুজন।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ৪৪ জনকে রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে (সিপিএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ৬৮ জন ব্যারাক ও বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। মারা গেছেন পুলিশের রমনা বিভাগের হাজারীবাগ পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল রাসেল শিকদার ও গেন্ডারিয়া থানার কনস্টেবল আয়েশা আক্তার।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএমপির প্রত্যেক সদস্যকে মশার কামড় থেকে রক্ষায় সহায়ক ক্রিম দেওয়া হচ্ছে। থানা ও ফাঁড়ি পৃথক পুলিশ দল গঠন করে ডিএমপির স্থাপনাগুলোতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছে।
খ. মহিদ উদ্দিন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস)

ডিএমপি সূত্র জানায়, ১৭ জুন রাসেল শিকদার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। সিপিএইচে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২২ জুন তিনি মারা যান। আর আয়েশা আক্রান্ত হন ১৫ জুন এবং একই হাসপাতালে মারা যান ২৩ জুন। আগের বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ট্রাফিক পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এএসআই ময়নুল হক।

চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ১ জন অতিরিক্ত উপকমিশনার, ১ জন পুলিশ পরিদর্শক, ৭ জন উপপরিদর্শক (এসআই), ১০ জন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), ১ জন নায়েক, ৫ জন ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট ও ১ জন এএসআই। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৮ জনই কনস্টেবল।

ডিএমপি সূত্র জানায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা ট্রাফিকের ওয়ারী, রমনা ও মতিঝিল বিভাগে কর্মরত।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ. মহিদ উদ্দিন গত বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএমপির প্রত্যেক সদস্যকে মশার কামড় থেকে রক্ষায় সহায়ক ক্রিম দেওয়া হচ্ছে। থানা ও ফাঁড়ি পৃথক পুলিশ দল গঠন করে ডিএমপির স্থাপনাগুলোতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছে।

এদিকে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সম্প্রতি ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএমপির অপরাধ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছেন।

ওই নির্দেশনা কার্যকরের জন্য ডিএমপি কমিশনার ১২ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন। ডিএমপির ৯ অতিরিক্ত কমিশনার ও ৯ যুগ্ম কমিশনারকে এ ব্যাপারে তদারকির নির্দেশ দেন কমিশনার।

গত দেড় মাসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ১১৪ জন সদস্য এতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন নারী সদস্যসহ দুজন।

রাজারবাগ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ

সিপিএইচের পরিচালক পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. রেজাউল হায়দার বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এখানে রোগীর অতিরিক্ত চাপ। রক্তের প্লাটিলেট এক লাখের বেশি আছে এমন ডেঙ্গু রোগীকে জরুরি বিভাগের অবজারভেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা বাসায় থেকে সুস্থ হয়ে উঠবেন, এমন রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

এই হাসপাতালে অন্তত ১৪০ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন বলে জানান রেজাউল হায়দার। তাঁরা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে আসা পুলিশ এবং তাদের পরিবারের সদস্য। এখানে বদলির আদেশ হওয়া ৩৬ চিকিৎসক যোগ দিলে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় কাজে আসবে।

আরও পড়ুন