আর কোনো ব্যক্তিকে যেন ভুলভাবে মামলায় জড়ানো না হয়: দুদককে হাইকোর্ট

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের আরও সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা উচিত। আর কোনো ব্যক্তিকে যেন ভুলভাবে মামলায় জড়ানো না হয়। অর্থ আত্মসাতের মামলায় নিরীহ জাহালমকে কারাভোগের জন্য ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায়ে এমন অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ৩৩টি মামলায় প্রকৃত আসামি ছিলেন আবু সালেক। তাঁর বদলে নিরীহ জাহালমকে আসামি দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে তিন বছর কারাবন্দী ছিলেন তিনি। এ নিয়ে প্রথম আলোয় খবর প্রকাশের পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালে মুক্তি পান টাঙ্গাইলের পাটকলশ্রমিক জাহালম।

পরে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন।

সেই রায়ে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ৩৩টি মামলায় নিরীহ জাহালমকে আসামি করা হয়েছিল। বিনা অপরাধে তিন বছর তিনি কারাভোগ করেন এবং তাঁকে চাকরিও হারাতে হয়। প্রকৃত আসামি আবু সালেকের পরিবর্তে নিরীহ জাহালমকে আসামি হিসেবে চিহ্নিত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা ফয়সাল কায়েস। তবে এই ভুলটি হয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কারণেই। তাঁদের ভুল পথে পরিচালিত করতে সহায়তা করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আবার তদন্তের সময় কোনো কর্মকর্তা জাহালমের বাড়িতেও যাননি। তাঁরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি।

আরও পড়ুন

রায়ে আরও বলা হয়, দুদকের কর্মকর্তারা অদক্ষ ও অযোগ্য ছিলেন। তবে তাঁরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকৃত আসামি আবু সালেকের পরিবর্তে জাহালমকে আসামি করেননি বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।

এ মামলার শুনানিতে দুদক আইনের ৩১ ধারা উল্লেখ করে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সরল বিশ্বাসে কোনো কাজের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, সে জন্য কমিশন, কোনো কমিশনার অথবা কমিশনের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।

আরও পড়ুন

হাইকোর্ট রায়ে বলেন, জাহালম আর সালেকের ছবি দেখে বোঝা যায়, দুজন আলাদা ব্যক্তি। অথচ আবু সালেকের পরিবর্তে নিরীহ জাহালমকে শনাক্ত করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা ফয়সাল কায়েস। ফয়সাল কায়েসই জাহালমকে সালেক হিসেবে শনাক্ত করার জন্য দায়ী। তিনি জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন