মেহেরুন নেসা চৌধুরীকে গার্ল গাইডদের সংবর্ধনা

বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের মেহেরুন নেসা চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিটের উদ্যোক্তা মেহেরুন নেসা চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির উলানিয়া হাউসে মোহাম্মদপুর গাইড জেলা ও বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশন রাজধানী অঞ্চলের পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রশিক্ষণ কমিশনার শাহিদা হোসেন, মোহাম্মদপুর গাইড জেলার কমিশনার সেলিনা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আফরোজা সুলতানা ও মেহেরুন নেসা চৌধুরীর ছেলে ফুয়াদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া প্রবীণ কয়েকজন গাইডও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদপুর গাইড জেলার কমিশনার সেলিনা চৌধুরী গাইডদের পক্ষ থেকে মেহেরুন নেসা চৌধুরীর হাতে সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেন। এ সময় মেহেরুন নেসা চৌধুরী বলেন, ‘যাঁরা দেশের জন্য, জাতির জন্য মেধা ও শ্রম দেন, তাঁদের মূল্যায়ন হওয়া দরকার। আমি আজ আবেগে আপ্লুত। সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।’

বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য মেহেরুন নেসা চৌধুরী
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

মোহাম্মদপুর গাইড জেলার সাতটি স্কুল ও একটি কলেজের গাইডরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। মেহেরুন নেসা চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবন তুলে ধরেন কমিশনার শাহিদা হোসেন।

অতিথিরা বলেন, ৯৩ বছর বয়সী মেহেরুন নেসা চৌধুরী দীর্ঘ চার দশক ধরে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত। ১৯৬৪ সালে বরিশাল জেলা কমিশনার হিসেবে বরিশাল মহিলা কলেজে রেঞ্জার বা সিনিয়র গার্ল গাইড সংগঠিত করে স্কুলের গার্ল গাইডদের দিয়ে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। একই সঙ্গে রোকেয়া হলের হাউস টিউটর পদেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি জাতীয় রেঞ্জার কমিশনার নির্বাচিত হন এবং দুই মেয়াদে এই পদে কাজ করেন। ১৯৭৩ সালে শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ থাকাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে রেঞ্জার কার্যক্রম শুরু করেন মেহেরুন নেসা চৌধুরী। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দুটি বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন তিনি

শাহিদা হোসেন বলেন, মেহেরুন নেসা চৌধুরী একাধারে একজন শিক্ষক, প্রশাসক, সংগঠক ও সমাজসেবক। তিনি বহু গুণে গুণান্বিত। তাঁর নানা রকম কর্ম, কুশলতায় বাংলাদেশের তরুণসমাজ ঋদ্ধ হয়েছে। যাঁরা মমতাময়ী এই নারীর সান্নিধ্যে এসেছেন, তাঁরা তাঁর বিনয়, ধৈর্য ও প্রীতিপূর্ণ ব্যবহার কখনোই ভুলবেন না।

মোহাম্মদপুর গাইড জেলার সাতটি স্কুল ও একটি কলেজের গাইডরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

মোহাম্মদপুর গাইড জেলার কমিশনার সেলিনা চৌধুরী বলেন, ‘আপা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন। হয়তো কিছু আত্মস্থ করতে পেরেছি, কিছু পারিনি। তাঁর শেখানো পথ ধরে এখনো চলছি। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর ছাত্রীরা রয়েছেন। তাঁরা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’

মোহাম্মদপুর গাইড জেলার সাধারণ সম্পাদক আফরোজা সুলতানা বলেন, দীর্ঘ চার দশকের কর্মজীবনে তারুণ্যদীপ্ত, প্রাণচঞ্চল তরুণীদের সান্নিধ্য-সাহচর্যের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় পরিপুষ্ট হয়েছেন মেহেরুন নেসা চৌধুরী। তিনি নানা রকম প্রতিকূলতা ও সংকট-বিপদে অভয় ও আশ্রয় দিয়ে ছাত্রীদের স্নেহময় হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি কাজ করেছেন সংবেদনশীল অনুভূতি দিয়ে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ও সাফল্যমণ্ডিত ভবিষ্যতের প্রতি তাঁর ছিল আন্তরিক কামনা ও প্রচেষ্টা।