আকাশচুম্বী ‘টি এ টাওয়ার’: আধুনিকতার শিখরে একটি অসাধারণ বাণিজ্যিক ঠিকানা
ঢাকা শহরের আকাশরেখা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, আর তারই প্রতিচ্ছবি ট্রপিক্যাল হোমস্ লিমিটেডের নতুন উচ্চাভিলাষী প্রকল্প ‘টি এ টাওয়ার’। রাজধানীর কেন্দ্রস্থল মালিবাগে ৪৬ কাঠা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম ৪৫ তলাবিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন, যা আধুনিক স্থাপত্য, বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধা এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সংমিশ্রণে এক অনন্য ব্যবসায়িক ঠিকানা হয়ে উঠবে। ৫০০ ফুট উচ্চতার এই ভবন ঢাকার সবচেয়ে উঁচু বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। টি এ টাওয়ারের অবস্থান মতিঝিল ও হাতিরঝিলের সন্নিকটে হওয়ায় এটি চমৎকার ‘বিজনেস হাব’ হিসেবে গড়ে উঠবে।
কী কী থাকছে টি এ টাওয়ারে
ভবনটির সামনের রাস্তা ১২০ ফুট প্রশস্ত এবং পার্শ্ববর্তী রাস্তা ১০০ ও ২০ ফুট চওড়া, যা যান চলাচলের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক। ভবনটি অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত, যেখানে ৫০ শতাংশ জায়গা খোলা রাখা হয়েছে নিরাপত্তা ও আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে। ছয়টি বেসমেন্টসহ বিশাল কমপ্লেক্স, যা আধুনিক বাণিজ্যিক স্থাপনার জন্য উপযুক্ত। প্রতিটি ফ্লোরে ১৭ হাজার ৯৮২ বর্গফুট স্পেস, যাতে অফিস স্পেসের আকার ১ হাজার ৩০৬ থেকে ২ হাজার ৮১৩ বর্গফুট পর্যন্ত বিস্তৃত। শুধু তা-ই নয়, এতে রয়েছে ৩২৮টি গাড়ির পার্কিং সুবিধাবিশিষ্ট সুবিশাল পার্কিং লট, স্মার্ট অফিস স্পেস ও আধুনিক সুবিধা।
কর্মী বান্ধব পরিবেশে আধুনিক কর্মস্থল
টি এ টাওয়ার কেবল একটি বাণিজ্যিক ভবনই নয়, এটি একটি আধুনিক কর্মক্ষেত্রও, যেখানে কর্মব্যস্ত মানুষদের আরাম ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটির ১৪টি প্যাসেঞ্জার লিফট ও দুটি সার্ভিস লিফট, যা দ্রুত চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া ছয় জোড়া এস্কেলেটর, যা কর্মীদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করবে। সুনিপুণভাবে নকশাকৃত লবি ও রিসেপশন এলাকা, যা প্রথম দেখাতেই দেবে আভিজাত্যের ছাপ। টি এ টাওয়ার শুধু অফিস স্পেসের জন্য নয়, এটি কর্মীদের জন্য একটি সর্বাঙ্গীণ কর্মস্থলের পরিবেশ তৈরি করেছে।
বিনোদনের অনন্য আয়োজন
টি এ টাওয়ারে রয়েছে বিলাসবহুল বুটিক হোটেল ও সুপারমার্কেট। আর ভোজনরসিকদের জন্য একাধিক রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল ও মাল্টিপারপাস কমিউনিটি হল, যা করপোরেট ইভেন্ট ও সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ সুবিধা দেবে। এ ছাড়া ছাদের ওপরে রয়েছে সুইমিংপুল, টেলিস্কোপসহ সিটিভিউ কর্নার, কফি কর্নার এবং হেলিপ্যাড সুবিধা, যা অতিথিদের জন্য বাড়তি সুযোগ প্রদান করবে। শরীরের বাড়তি যত্ন নিতে থাকছে আধুনিক জিম (নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা), স্টিম রুম, সাউনা ও জ্যাকুজি, পুরুষদের সেলুন ও নারীদের পারলার। এতে শিশুদের জন্য সুসজ্জিত খেলার জায়গা, থ্রিডি মুভি থিয়েটার, ভিআর রুম ও ইনডোর গেমিং জোনও রয়েছে।
সর্বোচ্চ মানের নিরাপত্তাব্যবস্থা
টি এ টাওয়ার বাংলাদেশ জাতীয় ভবন কোড (বিএনবিসি) অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে রয়েছে সর্বোচ্চ মানের নিরাপত্তাব্যবস্থা। ‘ইউএল’ সার্টিফায়েড অগ্নি-প্রতিরোধী দরজা ও চাপযুক্ত অগ্নিনির্বাপক সিঁড়ি। ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রয়েছে সার্বক্ষণিক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা মনিটরিং ও সিসিটিভি নজরদারি, কেন্দ্রীয় পাবলিক অ্যাড্রেস (পিএ) সিস্টেম। এ ছাড়া আছে সম্পূর্ণ পাওয়ার ব্যাকআপসহ চারটি জেনারেটর, ডাবল-গ্লেজড, কম-নির্গমন তাপ-প্রতিরোধী কাচ, যা শক্তি সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
টি এ টাওয়ারের কাঠামোগত পরিকল্পনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) বিশিষ্ট প্রকৌশলীরা যুক্ত রয়েছেন। স্ট্রাকচারাল কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফখরুল আমিন। নিরাপত্তা ও ভবনটি সম্পর্কে ট্রপিক্যাল হোমস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ রবিউল হক বলেন, ‘উঁচু ভবন নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। তবে আমাদের দক্ষ প্রকৌশলী দল এটি বাস্তবায়ন করেছে। ভবনটির নকশা দেশীয় প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রণীত, যা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে তোলার জন্য সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।’
টি এ টাওয়ার শুধু ঢাকার বাণিজ্যিক অবকাঠামোর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নয়, এটি ব্যবসায়িক নতুন দিগন্ত। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, কৌশলগত অবস্থান ও বিলাসবহুল পরিবেশের কারণে এটি প্রযুক্তি, ব্যাংকিং, করপোরেট হেডকোয়ার্টার ও স্টার্ট আপসহ নানা ধরনের ব্যবসার জন্য আদর্শ স্থান হয়ে উঠবে। এই আকাশচুম্বী স্থাপনা একদিকে যেমন ঢাকার দিগন্তরেখাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে, অন্যদিকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের কর্মক্ষেত্র তৈরি করেছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে এমন এক স্থানে ব্যবসার সুযোগ পাওয়া সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা।