জগন্নাথের দুই শিক্ষককে সেই ছাত্রীর মুখোমুখি করল ডিবি

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার অপমৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে শিক্ষার্থীরা লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। গতকাল দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’–এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়ছবি: দীপু মালাকার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের দুই শিক্ষককে সেই ছাত্রীর মুখোমুখি করল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে তাঁদের ডেকে নেওয়া হয়।

ওই ছাত্রীর সঙ্গে তাঁর বাবা ডিবি কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। উপস্থিত হয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং আরেকজন শিক্ষক।

জগন্নাথের ওই ছাত্রী রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সঙ্গে ডিবি কর্মকর্তারা আলাদাভাবে কথা বলেছেন। আবার দুই শিক্ষকের সামনেও কথা বলেছেন। অভিযোগের বিষয়ে শুনেছেন। তিনি আরও বলেন, ডিবি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে দুই শিক্ষককে তাঁর (ছাত্রী) নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার মতো কোনো পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করা হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন এবং আরেকজনের বিরুদ্ধে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় যৌন হয়রানি ও নানা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ শিক্ষার্থী সোচ্চার হন। গত সোমবার তিনি ডিবিতে গিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেন।

বিষয়টি নিয়ে ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছেও একটি আবেদন করেন। পরদিন ডিবি তাঁকে ও দুই শিক্ষককে ডেকে নিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন–অর–রশীদ।

ডিবি কার্যালয়ে যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের একজন প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু ওই ছাত্রী ডিবিতে অভিযোগ জানিয়েছেন, সেহেতু ডিবি তাঁদের (দুই শিক্ষক) ডেকেছিল। সেখানে গিয়ে তাঁরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ছাত্রীটির নিরাপত্তা বিঘ্নিত না করতে বলা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার কোনো কারণই নেই। ছাত্রীর অভিযোগ ‘কাল্পনিক’।

আরও পড়ুন

ওই ছাত্রী প্রথম আলোকে গত মঙ্গলবার বলেছেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিচার চেয়ে তিনি ২০২০ সাল থেকে ঘুরছেন। এরপর তাঁকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করা হয়েছে। একটি পরীক্ষায় তিনি ৪০–এ শূন্য পান। তিনি বলেন, ‘যে ম্যাডাম পরীক্ষায় শূন্য দিয়েছেন, তিনি ওই স্যারের বন্ধু ছিলেন।’

বিচার চাওয়ার কারণে ওই ম্যাডামের একটি ও বিভাগীয় প্রধানের দুটি বিষয়ে তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।