মাঝসাগরে বিকল ট্রলার, বাঁচতে যাত্রীরা উড়াচ্ছিলেন ‘লাল কাপড়’

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ৫৫ যাত্রী নিয়ে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে আসছিল একটি যাত্রীবাহী কাঠের ট্রলার। মাঝপথে এসে ট্রলারটি বিকল হয়ে যায়। সাগরের প্রবল ঢেউয়ে দুলতে থাকা ট্রলারটিতে যাত্রীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর অদূরে একটি জাহাজ দেখতে পেয়ে লাইফ জ্যাকেট ও কয়েকজন যাত্রীর পরনের লাল কাপড় উড়িয়ে সংকেত দেওয়া হয়। পরে যাত্রীবাহী জাহাজটি এসে ট্রলারটিকে রশি বেঁধে উপকূলে টেনে নিয়ে যায়। এতে রক্ষা পান যাত্রীরা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন জাহাজ ও ট্রলারের যাত্রীরা।
আবদুল কাদের নামের একজন যাত্রী ফেসবুকে লাইভে এসে বলেন, ট্রলারটি যখন বিকল হয়ে যায়, তখন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। এ ছাড়া প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ে জাহাজটি দুলতে থাকে। ভয়ে এ সময় অনেক যাত্রী নিজেদের গায়ের জামা খুলে উদ্ধারের সংকেত দিচ্ছিলেন। জাহাজটি আসায় তাঁরা প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।

ট্রলারটিকে উদ্ধার করা জাহাজ এমভি আইভি রহমানের মাস্টার আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, উপকূল থেকে অন্তত ছয় কিলোমিটার দূরে ট্রলারটি বিকল হয়ে পড়ে। যাত্রী নিয়ে কুমিরা থেকে সন্দ্বীপের উদ্দেশে যাওয়ার সময় জাহাজের ব্রিজ থেকে তিনি ট্রলারটির সংকেত দেখতে পান। যাত্রীদের জীবনের কথা চিন্তা করে জাহাজটিকে ঘুরিয়ে ট্রলারের কাছে নিয়ে আসেন। পরে ট্রলারটি জাহাজের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে উপকূলে নিয়ে আসা হয়েছে।

আমির হোসেন আরও বলেন, ট্রলারটি টেনে নিয়ে আসার সময় যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না নজরে রাখতে দুজন শ্রমিককে জাহাজের পেছনে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। যাত্রীরা নিরাপদেই উপকূলে পৌঁছেছেন।

কুমিরা-গুপ্তাছড়া নৌপথের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যাত্রীদের চাপ রয়েছে নৌপথটিতে। তাই সকাল থেকে সাগরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকার পরও বাড়তি লাভের আশায় যাত্রীদের নিয়ে রওনা হয় ট্রলারটি।

জানতে চাইলে গুপ্তছড়া ঘাটের ইজারাদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মানিক প্রথম আলোকে বলেন, সতর্কতা সংকেত থাকায় তাঁরা ট্রলারটি ছাড়তে চাননি। যাত্রীদের অনুরোধে পরে বাধ্য হন।

মো. মানিক বলেন, ট্রলারটি বিকল হওয়ার খবর পেয়ে যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য লাল বোট পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেটি পৌঁছার আগেই অন্য জাহাজ ট্রলারটিকে উদ্ধার করে।