নাতনির হাত ধরে ভোট দিতে এলেন ৯৭ বছরের বিনোদিনী চাকমা

৯৭ বছর বয়সে ভোট দিতে আসা বিনোদিনী চাকমা। আজ সকাল ১০টার দিকে খাগড়াছড়ির দক্ষিণ খবংপুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রেপ্রথম আলো

বিনোদিনী চাকমার বয়স ৯৭ বছর। বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছে শরীর। জোর নেই হাতে-পায়ে। অন্যের সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না। তবু প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সবাইকে বারবার বলছিলেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তিনি ভোট দেবেন। তিনি খবংপুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। ভোট দিতে যান বাড়ি থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ খবংপুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাঁর সম্মানে ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো সবাই তাঁকে আগে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেন।

বিনোদিনী চাকমাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তরুণ ভোটাররা। ভোটকেন্দ্রে থাকা লোকজন বলেন, প্রবীণ ভোটারদের কাছ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণ খবংপুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে দেখা হয় বিনোদিনী চাকমার সঙ্গে। তাঁর পরনে পিনোন-হাদি আর হাতে একটা গামছা। স্থানীয় লোকজন বলেন, এলাকায় যে দু-তিনজন প্রবীণ ভোটার আছেন, এর মধ্যে তিনি একজন।

ভোট দিয়ে এসে বিনোদিনী চাকমা বলেন, ‘এলাকায় পোস্টার আর প্রচারের মাইকের শব্দ শোনার পর থেকে ভোট দেওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছিলাম সবাইকে। দুই দিন আগে থেকে প্রতিবেশী এক নাতনিকে বলে রেখেছি, ভোট দিতে যাব। যেন সে আমাকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যায়। তাই সকালে উঠে ভোট দিতে এসেছি। সুন্দর পরিবেশ। আমাকে লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে। আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে।

‘তবে ভোটব্যবস্থা আগে থেকে কঠিন হয়ে গেছে। আগে আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে গণভোট দিতাম। আর এখন ভোটার স্লিপ খোঁজা লাগে, টিপসই দেওয়া লাগে, সিল মারা লাগে, এরপর ব্যালট ভাঁজ করে বাক্সে ফেলতে হয়। তারপরও যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন ভোট দিতে আসব।’

নাতনি সেতু চাকমা বলেন, ‘সকাল থেকে ভোট দিতে আসার জন্য অস্থির হয়ে আছেন। অথচ ভালো করে হাঁটতে পারেন না। কেন্দ্র আর ভোট দিতে আসা লোকজন দেখারও ইচ্ছা পোষণ করেন। তাই নানির ইচ্ছা পূরণ করতে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছি।’