সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদনের ওপর শুনানি ৯ নভেম্বর

সুপ্রিম কোর্ট
ফাইল ছবি

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানির জন্য ৯ নভেম্বর তারিখ রেখেছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ তারিখ ধার্য করেন।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় থাকা রিভিউ আবেদনটি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আদালত বলেছেন, রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য ৯ নভেম্বর কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। এর বৈধতা নিয়ে করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।

হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। একই বছরের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে আপিল খারিজ করে রায় দেন।

২০১৭ সালের ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তাঁর লেখা রায়ে গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেন।

এস কে সিনহার এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। কেউ কেউ তখনকার প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেন। অন্যদিকে এ রায়কে স্বাগত জানায় বিএনপি।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পর ছুটি নিয়ে বিদেশে যান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। ছুটি শেষে কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে তাঁর পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌঁছায়। পরে তাঁর পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

আপিল খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন (রিভিউ) করে রাষ্ট্রপক্ষ। যা গত বছরের আগস্টে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে।

চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। পুনর্বিবেচনার আবেদনটি গত ১৩ জুলাই আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ৯৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল। সেদিন বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তখন আদালত ১০ আগস্ট বিষয়টি কার্যতালিকার ওপরের দিকে আসবে জানান। এর ধারাবাহিকতায় আজ পুনর্বিবেচনার আবেদনটি কার্যতালিকার ৪৩ নম্বর ক্রমিকে ছিল।