সাইবার সুরক্ষা ও ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে জিএনআই ও আর্টিকেল নাইনটিনের উদ্বেগ
বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া ও ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভ (জিএনআই)। এদিকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়ার উদ্বেগ জানিয়ে তা আইনে রূপ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে অর্থবহ এবং কার্যকর আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে আর্টিকেল নাইনটিন।
সোমবার জিএনআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের দুই অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রযুক্তিতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে জিএনআই। বিশ্বব্যাপী শতাধিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান, বিনিয়োগকারী, নাগরিক সমাজ ও শিক্ষক–গবেষকদের নিয়ে গঠিত হয়েছে এই প্ল্যাটফর্ম।
জিএনআইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক উদ্যোগে—সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়ায় স্বচ্ছতা এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অংশগ্রহণের ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে জিএনআই। এই দুই অধ্যাদেশের খসড়ায় স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণের ঘাটতি পূর্ববর্তী সরকারগুলোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের কথা মনে করিয়ে দেয়। একই সঙ্গে নির্বাহী ক্ষমতার অত্যধিক ব্যবহারসংক্রান্ত যেসব সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তা আরও বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অনলাইন সার্ভিস প্রোভাইডারদের ওপর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা প্রয়োগের চর্চা ঘিরে যে ঐতিহাসিক উদ্বেগ রয়েছে, তার যথাযথ সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশগুলো। একই সঙ্গে অধ্যাদেশগুলো বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর গুরুতর এবং অব্যাহত হুমকি সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাত সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা জিএনআই স্বীকার করে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে, এই অধ্যাদেশগুলোর মতো সংস্কার উদ্যোগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করে এবং তাঁদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে যথাযথ, স্বচ্ছ, দূরদর্শী ও অধিকারভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে জিএনআই।
আলোচনার আহ্বান আর্টিকেল নাইনটিনের
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতের আগে অন্তর্বর্তী সরকার সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন। এই অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করার আগে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে অর্থবহ এবং কার্যকর আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
সোমবার আর্টিকেল নাইনটিনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এই অধ্যাদেশ কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে। প্রস্তাবিত আইনটিতে এমন অনেক শব্দ রয়েছে, যেগুলোর স্পষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। এই অস্পষ্টতার কারণে আইনটি অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। খসড়া অধ্যাদেশটি এখন যে অবস্থায় রয়েছে, বাংলাদেশে তা স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।