কর দাবি নিয়ে গ্রামীণ কল্যাণের সাত আবেদন খারিজ, দিতে হবে ১১৯ কোটি টাকা

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ছয়টি করবর্ষের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এবিআর) কর দাবি নিয়ে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গ্রামীণ কল্যাণের করা সাতটি আবেদন (আয়কর রেফারেন্স) খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কর আরোপের যৌক্তিকতা প্রশ্নে করা সাতটি আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ রায়ের ফলে গ্রামীণ কল্যাণকে আয়কর বাবদ দাবির বাকি ১১৯ কোটি টাকা এখন পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এর আগে হাইকোর্টে ২০১৫ সালে চারটি, ২০১৬ সালে একটি, ২০১৮ সালে দুটিসহ গ্রামীণ কল্যাণ পৃথক সাতটি আবেদন (আয়কর রেফারেন্স) করে। আদালতে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী, মো. উম্বর আলী ও দেলোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।

রায়ের পর সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের পর ছয়টি করবর্ষের বিপরীতে গ্রামীণ কল্যাণের কাছে এনবিআরের দাবি ছিল ৫৫৫ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৬২৪ টাকা। এই দাবির বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে ৪৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৪ টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণ কল্যাণ। এ হিসাবে গ্রামীণ কল্যাণের কাছে এবিআরের আয়কর বাবদ দাবির বাকি ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৯০ টাকা পাওনা। রেফারেন্স আবেদনগুলো খারিজ হওয়ায় গ্রামীণ কল্যাণকে আয়কর বাবদ দাবির অবশিষ্ট ১১৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।’

অবশ্য গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যমতে, উপকমিশনার অব ট্যাক্সেস (ডিসিটি) মূল্যায়ন করে ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ (১২ মাস) ও ২০১৬-১৭ (ছয় মাস)—এই করবর্ষের জন্য গ্রামীণ কল্যাণের প্রতি করারোপ করে। এর বিরুদ্ধে গ্রামীণ কল্যাণ কমিশনার অব ট্যাক্সেসে আপিল করে বিফল হন। ডিসিটির সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। পরে কর আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেও বিফল হয় গ্রামীণ কল্যান। এ অবস্থায় ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে হাইকোর্টে পৃথক সাতটি আবেদন (রেফারেন্স) করে গ্রামীণ কল্যাণ।