গুম করলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, তেজগাঁও, ঢাকা। ২৮ আগস্টছবি: পিআইডি

‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’–এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রস্তাবিত আইনে গুম করার অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়াটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে আরও আলোচনা করে খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবারও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে।

এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা এবং একটি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত রাখার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের ৪০তম বৈঠকে। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শফিকুল আলম বলেন, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়ায় গুমকে সংজ্ঞাসহ চলমান অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। গোপন আটক কেন্দ্র স্থাপন বা ব্যবহারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে গুমসংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষাসংক্রান্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, অভিযোগ গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্নের বাধ্যবাধকতা, ভুক্তভোগী, তথ্য প্রদানকারী ও সাক্ষীর অধিকার সুরক্ষা, ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণ ও আইনগত সহায়তার নিশ্চয়তার বিধানও রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে।

শফিকুল আলম বলেন, আজকে কেবল নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি নিয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নিয়ে আসা হবে।

যে তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হওয়া তিনটি স্থলবন্দর হচ্ছে, নীলফামারীর চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর ও রাঙামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর। এ ছাড়া হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ১৭ অক্টোবর লালন সাঁইয়ের ‘তিরোধান দিবস’কে ‘ক’ শ্রেণীভুক্ত দিবস ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।