ঠিকাদার নিয়োগ করে সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দাবি

‘ফুলবাড়ী দিবস’ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা। ঢাকা, ঢাকা। ২৬ আগস্ট
ছবি: সংগৃহীত

সমুদ্রে তেল-গ্যাস উত্তোলন করার অসম চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। রপ্তানির সুযোগ রেখে সমুদ্রে মার্কিন কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা দেশবাসী মেনে নেবে না। দেশের শতভাগ মালিকানা রেখে প্রয়োজনে ঠিকাদার নিয়োগ করে সমুদ্রে দ্রুত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করতে হবে।

‘ফুলবাড়ী দিবস’ উপলক্ষে আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা।

২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জি নামের একটি কোম্পানির কয়লা প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনের বিশাল সমাবেশে গুলি চালায় সেই সময়ের বিডিআর। এতে তিনজন নিহত ও  দুই শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হন। এরপর ফুলবাড়ীর পাশে পার্বতীপুর, বিরামপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মুখে সরকার দাবি মেনে নিয়ে ‘ফুলবাড়ী চুক্তি’ করে। এর পর থেকে দিনটিকে ‘ফুলবাড়ী দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন আন্দোলনকারীরা।

ফুলবাড়ীতে সেদিন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যদের গুলিতে নিহত তিন তরুণ আমিন, সালেকীন ও তরিকুলের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি করেন কমিটির সংগঠক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, এখনো উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলে মানুষ-জমি-জলা-পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। এশিয়া এনার্জিকে এখনো বহিষ্কার করা হয়নি। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় দলমত–নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এ ছাড়া আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের নতজানু নীতি ও সাম্রাজ্যবাদী–আধিপত্যবাদী শক্তির অপতৎপরতা সম্পর্কে সজাগ থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান রুহিন হোসেন।

সমাবেশে আরও ছিলেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক এম এম আকাশ, সংগঠক টিপু বিশ্বাস, বজলুর রশীদ ফিরোজ, সাইফুল হক প্রমুখ।

সমাবেশে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ছাড়াও বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বাসদ (মার্ক্সবাদী), জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), গণমুক্তি ইউনিয়ন, গণমঞ্চ, বাসদ (মাহবুব), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘ফুলবাড়ী দিবসে’ নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল নিবেদন করে।