আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যেভাবে তফসিলের খবর

কোলাজ: প্রথম আলো

বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার খবর গুরুত্বের সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

তফসিল অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি। একই দিন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও হবে।

আরও পড়ুন
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন
ছবি: বাসস

রয়টার্স

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর এটি বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটারদের চিন্তাভাবনা-বিবেচনায় থাকা বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, পোশাকশিল্প পুনরুজ্জীবিত করা, বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সম্পর্ক পুনর্গঠন।

আগামী নির্বাচনের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, দলগুলোর সম্ভাব্য অবস্থান ও ভোটের প্রধান ইস্যুগুলো নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। এই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের জরিপের বরাতে বলা হয়, নির্বাচনে বিএনপি সবচেয়ে বেশি আসন জিততে পারে। প্রতিবেদনে জামায়েতে ইসলামীর ব্যাপারে বলা হয়, নির্বাচনের ফলাফলে দলটির দ্বিতীয় অবস্থানে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে জরিপ অনুযায়ী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিএনপি ও জামায়াতের তুলনায় অনেক পিছিয়ে।

আরও পড়ুন

এএফপি

১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার বরাতে প্রথমে সংবাদ ‘অ্যালার্ট’ দেয় ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি। এরপর এ বিষয়ে তারা হালনাগাদসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন করে। একই দিন একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক সংস্কারসংক্রান্ত সনদের ওপর গণভোট হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন দল বিএনপির জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আরেকটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে এএফপি। এতে ভোটারসংখ্যা, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, দলগুলোর সম্ভাবনা, গণভোটেরে মতো বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুন

এপি

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১৮ মাস পর বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছিলেন। সেই নির্বাচন বর্জন করেছিল তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো। তারা ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি। কিন্তু শেখ হাসিনার দল এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ দলটিকে ভোটে রাখা হয়নি।

আরও পড়ুন

আল-জাজিরা

বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তফসিলের খবর প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। খবরের শিরোনাম—রাজনৈতিক অস্থিরতার এক বছর পর বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক সংস্কার প্রশ্নে একই দিন গণভোটও হবে। নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল অংশ নিতে পারছে না। দলটির নেতারা সতর্ক করেছেন যে নির্বাচনী প্রচারের গতি ত্বরান্বিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্থিরতা বাড়তে পারে। নির্বাচনের তফসিলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বর্ণনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করল। ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে, এই নির্বাচন ও গণভোট সেই পথরেখাকে দৃঢ় করবে।

আরও পড়ুন

অন্যান্য গণমাধ্যম

ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তফসিলের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এসব গণমাধ্যমের মধ্যে রয়েছে দ্য হিন্দু, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে, আনন্দবাজার। এ ছাড়া ইউএস নিউজ, আনাদোলু এজেন্সির মতো সংবাদমাধ্যম তফসিলের খবর প্রকাশ করেছে।