মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফিরিয়ে নিতে আসছে জাহাজ

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির কয়েকজন সদস্য। সোমবার সকালে ঘুমধুম বিজিবি ক্যাম্পেছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী পুলিশ (বিজিপি), সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির নৌবাহিনীর একটি জাহাজ কক্সবাজারে আসছে। বাংলাদেশের অনুমতি পেলে সেটি রাখাইনের রাজধানী সিত্তে থেকে আগামীকাল শনিবার যাত্রা শুরু করবে।

আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো প্রক্রিয়া শেষ করে অনুমতি দেবে বলে জানা গেছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে তুমুল লড়াই অব্যাহত থাকায় মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের একটি জাহাজ ইয়াঙ্গুন থেকে সিত্তে পাঠিয়েছে। পরে সিত্তে থেকে জাহাজটি কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতের কাছে পৌঁছাবে। সেখান থেকে নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। যদিও এ মুহূর্তে সিত্তে বন্দরসহ রাখাইনের আশাপাশ এলাকায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর একাধিক জাহাজ আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে মোতায়েন রয়েছে।

ইয়াঙ্গুন থেকে মুঠোফোনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেন সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের কাছে নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানোর বিষয়ে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। জাহাজটি আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রার জন্য প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেছে।’

এদিকে ঢাকায় সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানোর প্রস্তুতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। এখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরগুলো এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করে জাহাজটি প্রবেশের অনুমতি দেবে।

প্রসঙ্গত, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই চরম আকার ধারণ করেছে। গত রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও তাদের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে দেশটির অন্তত ৩৩০ জন নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

মিয়ানমার শুরুতে তাঁদের নাফ নদী হয়ে রাখাইনের মংডুতে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশ তাঁদের উড়োজাহাজে ফিরিয়ে নেওয়ার বিকল্প প্রস্তাব দেয়। মিয়ানমার উড়োজাহাজের পরিবর্তে পরে নিজেদের নাগরিকদের সমুদ্রপথে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলে দুই দেশ তাতে সম্মত হয়।