সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ, প্রতিমন্ত্রী তাজুল, সাংবাদিক মুন্নী সাহার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতফাইল ছবি: প্রথম আলো

সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামসহ তাঁর পরিবারের পাঁচজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র অকার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া সাংবাদিক মুন্নী সাহা, তাঁর স্বামী কবির হোসেন, মা আপেল রানীসহ পাঁচজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে বলেছে, সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় কৃষিজমি, ফ্ল্যাট-প্লট ক্রয় এবং তাঁর নামে বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁরা সম্পত্তি হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন। এ জন্য তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত ফরহাদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলামের বিষয়ে দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থেকে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, তাজুল, তাঁর স্ত্রী হাসু ইসলাম, ছেলে ধানাদ ইসলাম, মেয়ে ফারাহ ইসলাম ও শামা ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ব্যাপারে দুদক আদালতকে বলেছে, তাঁর বিরুদ্ধে মালয়েশিয়াতে শ্রমিক পাঠানোর নামে প্রতারণা করে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন করার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি বিদেশি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিনের ব্যাপারে দুদক আদালতকে জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ৫৫ হাজার ৩১০ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে ভোটার বানানোর অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

এ ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের ব্যাপারে দুদক আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আদালত শাহীন চাকলাদারের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তাঁর পরিবারের ব্যাপারে দুদক আদালতকে বলেছে, সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তাঁর স্বামী কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায় অর্থ উপার্জন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তাঁরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, মুন্নী সাহা, তাঁর স্বামী কবির হোসেন, মুন্নী সাহার মা আপেল রানী সাহা, ভাই প্রণব কুমার সাহা এবং তপন কুমার সাহার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।