‘শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিপ্রক্রিয়া ব্যাহত হবে’

রাঙামাটিতে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশছবি: প্রথম আলো

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রথাগত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হবে। এতে পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টির শঙ্কাও রয়েছে। পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে যে শান্তিপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, শাসনবিধি বাতিল হলে তা ব্যাহত হবে।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিলের ষড়যন্ত্র হচ্ছে, দাবি করে এর প্রতিবাদে রাঙামাটিতে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা কথাগুলো বলেন। পাহাড়ের বিভিন্ন সংগঠন ও প্রথাগত প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। আজ সকাল ১০টায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসন কার্যালয় ফটকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে একই বিষয়ে বান্দরবানেও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাঙামাটিতে আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা প্রমুখ।

মানববন্ধনে হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

বান্দরবান

সকাল ১০টায় জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চ চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করে হেডম্যান-কার্বারি কল্যাণ পরিষদ। এতে জেলার সাত উপজেলা থেকে পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ অংশ নেন।

কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন হেডম্যান-কার্বারি কল্যাণ পরিষদের সভাপতি হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা, সাধারণ সম্পাদক উনিহ্লা মারমা, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং মারমা, মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি মংসিং মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বীরো লাল তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়।

কর্মসূচিতে হেডম্যান-কার্বারি কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উনিহ্লা মারমা বলেন, ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসনবিধি অনুযায়ী পার্বত্য অঞ্চলের শাসন-প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা হয়ে থাকে। পাহাড়ি সমাজের তিন সার্কেলের রাজা বা চিফ, হেডম্যান ও কার্বারির কার্যক্রমও পরিচালনা হয় এর মাধ্যমে। এই শাসনবিধি বাতিল অথবা সংশোধন হলে পাহাড়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকারের আইনি ভিত্তিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হিসেবে পার্বত্য শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

বক্তারা এ সময় ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধিকে বৈধতা দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন বাতিলের দাবি জানান।