স্কুল করতে টিলা কাটছেন ইউপি চেয়ারম্যান

বিদ্যালয় করতে টিলা কাটছেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ইউপি চেয়ারম্যান সোনা মিয়া। ছবিটি ৩০ মার্চ সকালে মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রাম থেকে তোলাপ্রথম আলো

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মায়ের নামে প্রাথমিক বিদ্যালয় করতে প্রায় ৫০ ফুট উঁচু একটি টিলা কাটছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে অবস্থিত টিলাটি কাটছেন হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনা মিয়া। টিলা কাটার মাটি বিক্রিও করা হচ্ছে।

গত শনিবার সকালে সরেজমিনে রসুলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রসুলপুর সরকারি আবাসন এলাকার দক্ষিণে একটি কৃষিজমির পাশে প্রায় ৫০ ফুট উঁচু টিলাটির অবস্থান। সকাল সাড়ে নয়টা থেকে মাঝারি একটি খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে পাদদেশ থেকে কাটা শুরু হয়েছে টিলাটি। কয়েকটি পিকআপ পালা করে পরিবহন করছে টিলার মাটি। মাটি পরিবহনের জন্য পাশেই মাটি কেটে করা হয়েছে নতুন রাস্তা।

মো. ইয়াছিন মিয়া নামের এক ব্যক্তি ওই স্থানে মাটি আনা-নেওয়ার তদারক করছিলেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিলাটি কাটছেন সোনা মিয়া চেয়ারম্যান। টিলা কেটে এখানে একটি স্কুল করা হবে বলে শুনেছি। আমার এক আত্মীয় এখান থেকে মাটি কিনেছেন জায়গা ভরাট করতে। আমি মাটি নেওয়ার কাজের তদারকি করছি।’

টিলা কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনা মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘রসুলপুর গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় করে দেওয়া গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। তাই আমার ব্যক্তিগত ৮৮ শতক (প্রায় ৩ বিঘা) কৃষি শ্রেণি জমিতে মায়ের নামে একটি বিদ্যালয় করছি। এ জন্য একটি টিলার কিছু অংশ কাটতে হচ্ছে। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি। মানুষের কল্যাণে নিজের জায়গায় নিজ অর্থে বিদ্যালয়টি করছি। এখানে কোনো লুকোচুরি নেই।’

দৃশ্যমান একটি টিলা কীভাবে কাগজপত্রে কৃষিজমি হলো এবং টিলা কাটার অনুমতি কীভাবে মিলল, জানতে চাইলে মিরসরাইয়ের ইউএনও মাহফুজা জেরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমত টিলা কেটে বিদ্যালয় করতে আমি কাউকে কোনো অনুমতি দিইনি। আর ব্যক্তিগত কৃষি শ্রেণির জায়গা হলেও সেখানে পাহাড় বা টিলা থাকলে পরিবেশ রক্ষার সার্থে তা কাটার সুযোগ নেই। আর টিলার জায়গাটি কৃষি শ্রেণি হওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে ভূমি কর্মকর্তা ও তহশিলদারকে পাঠানো হচ্ছে।’

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এক চেয়ারম্যানের টিলা কাটার বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’