ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা নিহত ও দেড় বছরের শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার যথাযথ তদন্ত, আসামিকে গ্রেপ্তার এবং জড়িত যান জব্দের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুটিকে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য তার মামার হেফাজতে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন নজরে আনা হলে শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার স্বতঃপ্রণোদিত এ আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য ২০ মে দিন রেখেছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, র্যাবের মহাপরিচালক সংশ্লিষ্ট অধিনায়ক বা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেবেন যে তাঁরা যেন আসামিকে এই সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করেন। দুর্ঘটনায় জড়িত যানবাহনটি শনাক্ত করে, আলামত বিনষ্টকারী ও অপরাধীদের আশ্রয়দানকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করেন।
আদেশে আদালত বলেছেন, শিশু কল্যাণ বোর্ডের মতামত সাপেক্ষে শিশুটিকে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য তার মামার হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো। শিশুটি শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে বা চিকিৎসার প্রয়োজন হলে অগ্রাধিকার দিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিশুটির চিকিৎসায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা, এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ২০ মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
‘ময়মনসিংহে সড়কে নিহত সেই মা ও আহত শিশুর পরিচয় মিলেছে’ শিরোনামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াসমিন বিথী।
গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ৯ মে দিবাগত রাতে ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ওই শিশু ও তার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা জানা যায়নি। স্থানীয় মানুষেরা বিষয়টি টের পেয়ে জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ কল দেন। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে ওই নারীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভালুকা থানায় ১২ মে মামলা হয়।
এই মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করাসহ আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত যান জব্দ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ২০ মের মধ্যে আদালতকে জানাতে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার ও ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, ‘এই সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে তাঁরা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন ও কেন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি, সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং প্রথমে যাঁরা ঘটনাটি দেখে পুলিশকে অবহিত করেন তাঁদের নাম-ঠিকানা, জবানবন্দিসহ বিস্তারিত বর্ণনাসহ এই প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। বিষয়টি নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেওয়া হলো।’