বাঁশখালীর বাহারছড়া সৈকত: ঘরের কাছে আরেক কক্সবাজার

বাঁশখালীর বাহারছড়া সৈকতে দিন দিন বাড়ছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। সম্প্রতি তোলাছবি: মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন

সারি সারি ঝাউগাছ আর বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি। শেষ বিকেলের কমলা রঙের আলো গলে পড়ছে সাদা বালি আর নীল সমুদ্রের গায়ে। সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় করেছেন মানুষ। কেউ হাঁটছেন, কেউবা সমুদ্রের পানিতে পা ভেজাচ্ছেন। ঝাউবনের ভেতর শিশুদের ছোটাছুটি আর কোলাহল মিশে গেছে সন্ধ্যার পাখিদের ঘরে ফেরার শব্দে।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ, বাহারছড়া, ছনুয়া, গণ্ডামারা ও সরল উপকূল মিলিয়ে ৩৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত সমুদ্রসৈকত। এ যেন ঘরের কাছে আরেক কক্সবাজার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কক্সবাজারের পর বাঁশখালীর সমুদ্রসৈকত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত। সৈকতের চারটি ভিন্ন ভিন্ন এলাকার মধ্যে বাহারছড়ার দেড় কিলোমিটার এলাকা বেড়িবাঁধ আর ঝাউবন দিয়ে সাজানো।

উপজেলার রত্নপুর এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, ‘আমি চাকরি করি বেপজায়। ওই সুবাদে সহকর্মীরা আমার গ্রামের বাড়িতে আসেন। বিকেলে তাদের নিয়ে সৈকতে বেড়াতে এসেছি। ঘরের কাছে এমন গোছানো সমুদ্রসৈকত থাকা ভাগ্যের ব্যাপার।’

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার পর আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলার সংযোগ স্থাপনকারী তৈলারদ্বীপ সেতু পড়ে। ওই সেতু থেকে পিএবি সড়ক ধরে পুকুরিয়া ও সাধনপুর ইউনিয়ন পার করলে কালীপুর ইউনিয়ন। ইউনিয়নের সালেহার বাপের পুল থেকে পশ্চিম দিকে বশিরুল্লাহ মিয়াজির বাজার সড়ক ধরে আরও ২০ কিলোমিটার পথ গেলে পাওয়া যাবে বাহারছড়া সমুদ্রসৈকত। বাঁশখারী সদর থেকে এ সৈকতের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার।

সম্প্রতি বাহারছড়া সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সৈকতের উত্তর পাশে এক কিলোমিটার জুড়ে বেড়িবাঁধে সিসি ব্লক বসিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই ব্লকে বসে সমুদ্র দেখার পাশাপাশি সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। ব্লকের পাশে পাশে দোকানিরা চেয়ার টেবিল আর বড় ছাতা বসিয়েছেন। সেখানে খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি আড্ডায় মেতে ওঠেন বিভিন্ন বয়সী লোকজন। দক্ষিণ দিকের আধা কিলোমিটার সৈকতে লাগানো হয়েছে ঝাউগাছ।

বাহারছড়া সৈকত
ছবি: প্রথম আলো

সাতকানিয়া উপজেলার কলেজপড়ুয়া তিন বন্ধু জয়নাল, রাকিব ও সোহেল সৈকতে এসেছেন বাইক নিয়ে। সময় পেলেই সৈকতে ঘুরতে চলে আসেন বলে জানান তাঁরা।

সৈকতের ফুচকা বিক্রেতা আবদুর রহমান বলেন, প্রতিদিন বিকেল গড়াতেই দর্শনার্থীরা আসতে থাকেন। সন্ধ্যার দিকে জমজমাট বেচাকেনা হয়।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার বলেন, ‘বাঁশখালীর বাহারছড়া সৈকতে দর্শনার্থী বাড়ছে। আমরা তাঁদের আসা-যাওয়া ও সৈকতে বেড়ানোর সময় নিরাপত্তা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’