গরমে শিশুর যত্নে যেসব বিষয়ে নজর দিতে হবে

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি শিশু ফাতেমা আক্তারের সেবা করছেন নানী লিপি। আজ রোববার রাজধানীর আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

রাজধানীতে ৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিনের রেকর্ড হয়েছে। চারদিকে উত্তপ্ত হাওয়া। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি। আগামী কয়েক দিনে তা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। এতে প্রবীণ ও শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে বেশি। প্রচণ্ড গরমে একদম ছোট্ট শিশু কিছু বলতে পারে না, ছটফট করে, অভিভাবকদের বিরক্ত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের প্রতি বাড়তি নজর দিতে হবে। ঈদের কেনাকাটায় যাওয়ার সময় শিশুকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

শ্যামলীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটে আজ রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, অন্য সময়ের তুলনায় রোগীর চাপ তুলনামূলক কম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোজা শেষের দিকে হওয়ায় অনেকেই সপরিবার ঢাকা ছেড়েছেন। এ কারণে প্রচণ্ড গরমেও শিশু ভর্তির হার কম।

হাসপাতালের হাইডিপেনডেন্সি অ্যান্ড আইসোলেশন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রিয়াজ মোবারক বলেন, গরমে শিশুদের কষ্ট হয়, পানিশূন্যতা দেখা দেয়, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যা তৈরি হয়। তা ছাড়া শিশুদের হজম শক্তিও কমে যায়। তাই এ সময়ে শিশুদের প্রতি বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

প্রচণ্ড গরমে শিশুদের সুস্থ রাখতে প্রচুর পানি জাতীয় খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ অধ্যাপক রিয়াজের। তিনি বলেন, শিশুদের বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। শরীরে চুলকানি ও ঘামাচি যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরমে শিশুর পোশাক বাছাইও গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় শিশুকে ঢিলেঢালা ও সুতির পোশাক পরাতে হবে। ঘাম যেন শরীরে না জমে খেয়াল রাখতে হবে সেদিকেও। প্রয়োজনে শরীর মুছে দিতে হবে এবং নিয়মিত গোসল করাতে হবে। বাইরের খাবার বিশেষ করে পানি জাতীয় খাবার বা জুস শিশুদের না খাওয়ানোর পরামর্শ তাঁর।

ঈদের কেনাকাটায় শিশুদের সঙ্গে নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এই শিশু রোগবিশেষজ্ঞ। আবদ্ধ কোনো জায়গায় যেন শিশুরা অবস্থান না করে, সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি।

শিশু হাসপাতালের এপিডেমিওলজি বিভাগ থেকে জানা যায়, এখন বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের মতো রোগী আসছে। গরমের কারণে আসা শিশুদের প্রায় সবাই সেখানে চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। তবে ভর্তি রোগীর মধ্যে গরমজনিত সমস্যা নিয়ে আসা শিশু কম। গতকাল শনিবার বহির্বিভাগে ১৩ জন মাম্পস নিয়ে, ৬ জন চিকেন পক্স নিয়ে এসেছিল।

গরম ছাড়াও শিশুদের নিয়ে উদ্বেগের কারণ ডেঙ্গু জ্বর। রাজধানীতে এডিস মশা বেড়েছে। মশা বাড়ায় ডেঙ্গু রোগীও রয়েছে। শিশু হাসপাতালে গতকাল তিনজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে।

অধ্যাপক রিয়াজ মোবারক বলেন, এটা ডেঙ্গুর সময় নয়। কিন্তু রোগী ভর্তি হচ্ছে। গরমের পাশাপাশি মশার হাত থেকেও শিশুরা যেন সুরক্ষিত থাকে, সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন