ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাব প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে ২৮৮ আইনজীবীর বিবৃতি

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগপন্থীসহ সুপ্রিম কোর্টের ২৮৮ জন আইনজীবী।

আজ বৃহস্পতিবার পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘১৪ সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি রেজল্যুশন, বিশেষ করে অধিকার নামের বাংলাদেশের একটি এনজিওর নেতৃস্থানীয় দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। রেজল্যুশনটি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, কারণ, এটি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের বিচারিক কার্যক্রমের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ, যা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত।’

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার একটি মামলায় ১৪ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিনকে (এলান) দুই বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত। ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলা হয়েছিল। রায় ঘোষণার দিনই বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। তাতে আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের রায়ের নিন্দা জানানো হয়। পাশাপাশি অবিলম্বে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।

২৮৮ আইনজীবী বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ইইউ পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে তাদের গৃহীত রেজল্যুশনটি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করা থেকে নিজেদের নিবৃত্ত রাখবে।’

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রায় ঘোষণার দিন কয়েকটি দেশের কূটনীতিক বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের নামে অধিকারের দুজন কর্মকর্তার পক্ষ অবলম্বন করেছেন। এভাবে বিচার কার্যক্রমে কূটনীতিকদের উপস্থিতি অতি সক্রিয়তা, যা জেনেভা কনভেনশনের কার্যপরিধির আওতাবহির্ভূত।

বিবৃতিদাতা আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বশির আহমেদ, মো. আবদুন নূর দুলাল, মো. লায়েকুজ্জামান মোল্লা, আজহার উল্লাহ ভূঁইয়া, শাহ মঞ্জুরুল হক, জেসমিন সুলতানা, এম মাসুদ আলম চৌধুরী, মো. আবদুর রাজ্জাক, এ বি এম নূর–এ–আলম উজ্জ্বল, মোহাম্মদ হারুন–উর রশিদ, মো. মনিরুজ্জামান রানা, শফিক রায়হান শাওন প্রমুখ।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় ইতিমধ্যে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। একে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা বলে আখ্যা দিয়েছে সংগঠনটি। ১৭ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।