অনিয়ম ঠেকাতে কৌশল প্রণয়নের আহ্বান টিআইবির

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)ফাইল ছবি

সংসদ সদস্যদের থোক বরাদ্দ পুনরায় চালুর আগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য কৌশল প্রণয়ন করে তা কঠোরভাবে প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আগের মেয়াদের প্রকল্পের নিবিড় ও নিরপেক্ষ নিরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এই কৌশল প্রণয়ন করতে বলেছে টিআইবি। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

জাতীয় সংসদে গত রোববার প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের জন্য পাঁচ বছরে ২০ কোটি টাকা করে দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প চলমান। এটি শেষ হলে নতুন প্রকল্প নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালের ১২ আগস্ট ‘সংসদীয় আসনভিত্তিক থোক বরাদ্দ: অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক টিআইবির গবেষণায় দেখা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় পর্যায়ে অনেক স্কিমের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও স্কিম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ঠিকাদার ও তদারকি কর্তৃপক্ষের পারস্পরিক যোগসাজশ এবং কমিশন-বাণিজ্যের ফলে কাজের মান প্রত্যাশিত পর্যায়ের ছিল না। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে জনগণের অর্থের অপচয় হয়েছে এবং স্বার্থান্বেষী মহল লাভবান হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সময়ের সঙ্গে সংসদীয় আসনভিত্তিক থোক বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলেও তার সঠিক ব্যবহার ও সুশাসন নিশ্চিতের উদ্যোগ বরাবরই উপেক্ষিত রয়ে গেছে। কেননা, সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্যই অনুমোদিত কাজের অগ্রগতি তদারকি ও অভিযোগ নিষ্পত্তির একক দায়িত্বে থাকেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও আর্থিক সুবিধা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন অনিয়মকে প্রশ্রয় দেন সদস্যদের একাংশ। ফলে এসব কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই প্রকল্প সংসদ সদস্যের একাংশের জন্য স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা অর্জনের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ তৈরি করে আসছে। ফলে এ ধরনের প্রকল্প অনিয়ম-দুর্নীতিকে স্থানীয় পর্যায়ে স্বাভাবিকতায় পরিণত করেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ২০২০ সালের গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ করেছিল টিআইবি। কিন্তু ওই সুপারিশমালা আমলে নিয়ে সংসদ সদস্যদের থোক বরাদ্দ ব্যবহারে সুশাসন নিশ্চিতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। প্রকল্প ও স্কিমগুলোর কার্যকর তদারকি এবং প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সততা ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব-সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট অবশ্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অপরিহার্য। নতুন করে থোক বরাদ্দ কার্যক্রম শুরুর আগে বরাদ্দের নিবিড় ও নিরপেক্ষ নিরীক্ষার দাবি জানায় টিআইবি। একই সঙ্গে প্রকল্পের স্কিমগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।