উৎপাদন ব্যয় কমানোর প্রচেষ্টা কোথায়

ম. তামিম

সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোকে মূল্য সমন্বয় বলছে। কারণ, তারা উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করে। আসলে এটা মূল্যবৃদ্ধি। প্রশ্ন হলো, মূল্যবৃদ্ধিকে অবধারিত ধরা হচ্ছে কেন? উৎপাদন খরচ কমানোর চেষ্টা কোথায়?

বিদ্যুৎ খাতে দক্ষতা বাড়িয়ে, সঠিক জ্বালানির ব্যবহার করে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানির মাধ্যমে মূল্য সমন্বয় করা হলে এই বিষয়গুলো আসত, অংশীজনেরা পর্যালোচনা করতে পারতেন, যুক্তি তুলে ধরতে পারতেন; কিন্তু সরকার নির্বাহী আদেশে দাম বাড়াচ্ছে। ফলে সরকার যা বলছে, তা–ই মেনে নিতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

বিদ্যুতের দাম তিন বছর ধরে ধীরে ধীরে বাড়ানো হলে একসঙ্গে চাপ পড়বে না, এটা ঠিক; কিন্তু ধারাবাহিকভাবে শিল্প খাতে ব্যয় বাড়বে, মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। কারণ, সয়াবিন তেল থেকে শুরু করে রড—সব পণ্য উৎপাদনেই বিদ্যুৎ লাগে।

দাম বাড়ালে স্বল্প আয়ের অনেক মানুষের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার সাধ্যের বাইরে চলে যেতে পারে। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের মধ্যে কাউকে কাউকে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে হতে পারে। কারণ, তাঁদের আয় সেভাবে বাড়ছে না। বেশি দামের কারণে বিদ্যুৎ চুরিও বেড়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন

এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় কমানোর একটি উপায় হতে পারে—জ্বালানির ব্যবহার মাথায় রাখা। বর্তমানে সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় দেশি গ্যাস ব্যবহার করে। বিদ্যুৎ খাতে যে ভর্তুকি দিচ্ছি, তা গ্যাস উত্তোলনে ব্যবহার করলে নতুন গ্যাস পাওয়া সম্ভব। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পুরোদমে চালালে উৎপাদন খরচ কমবে। এমনকি খোলাবাজার থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেও ফার্নেস অয়েলের চেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।

উৎপাদন ব্যয় কমানোর চেষ্টা না করে উচ্চ ব্যয় মানুষের ওপর চাপালে তা অনেকেই সহ্য করতে পারবেন না। বিদ্যুতের এখন যে দাম, তা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ মূল্য বলা যায়।