কৃষি ব্যাংকের নেটওয়ার্কে হ্যাকারদের হামলা, তথ্য চুরির দাবি

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের নেটওয়ার্ক অবকাঠামোয় হামলা চালিয়ে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে হ্যাকাররা। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইজুলজিক এ তথ্য জানিয়েছে। এদিকে হামলার কথা স্বীকার করে নিজেদের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো উদ্ধারের কথা জানিয়েছে কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

ডার্ক ওয়েব (ইন্টারনেটের অন্ধকার জগৎ) পর্যবেক্ষণ করে থাকে আইজুলজিক। ডার্ক ওয়েব থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তিতে নিজেদের ওয়েবসাইটে কৃষি ব্যাংকে হ্যাকারদের হামলার কথা তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি।

নিজেদের ওয়েবসাইটে আইজুলজিক লিখেছে, কৃষি ব্যাংকে হামলার দায় স্বীকার করেছে র‌্যানসামওয়্যার গ্রুপ এএলপিএইচভি। তারা বলেছে, গত ২১ জুন ব্যাংকটির নিরাপত্তাব্যবস্থা ভেদ করে ১৭০ গিগাবাইটের বেশি সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেয় তারা। ব্যাংকের নেটওয়ার্কে হ্যাকাররা প্রবেশের ১২ দিনেও তা শনাক্ত করা যায়নি। এ সময়ে ব্যাংকটি সম্পর্কে জানতে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করতে যথেষ্ট সময় পেয়েছে হ্যাকাররা।

আইজুলজিক বলছে, কৃষি ব্যাংকের নেটওয়ার্ক থেকে কী ধরনের তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে, তার বিবরণও দিয়েছে হ্যাকাররা। এসব তথ্যের মধ্যে অ্যাকাউন্টের বিবরণ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও করসংক্রান্ত তথ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তথ্য রয়েছে। ব্যাংকের কিছু কর্মীর ব্যক্তিগত তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে।  

হ্যাকারদের সঙ্গে কৃষি ব্যাংক সমঝোতার আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানিয়েছে আইজুলজিক। প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হ্যাকাররা দাবি করেছে, তারা ব্যাংকটির দাতা ও বিনিয়োগকারীদের ই–মেইল পাঠিয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকটিকে ৮ জুলাই থেকে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেধে দিয়েছে। হ্যাকারদের আশা, এ সময়ের মধ্যে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

এদিকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান আজ সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হ্যাকাররা আমাদের প্রযুক্তি সেবায় হাত দিয়েছিল। এতে অনলাইন ব্যাংকিংয়ে কিছুটা সমস্যা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিজস্ব কর্মীদের মাধ্যমে আমরা সহজেই তা উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এখন পুরোদমে ব্যাংকিং সেবা চলছে। আমরা অনলাইন কার্যক্রম শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’  

তবে আইজুলজিক বলছে, হ্যাকাররা জানিয়েছে, তারা কৃষি ব্যাংকের নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর ভেতরে শক্তিশালী ব্যাকডোর স্থাপন করেছে। এর অর্থ, সাইবার অপরাধীরা ক্রমাগত এই নেটওয়ার্কে প্রবেশের সুযোগ পাবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আবারও হামলা করতে পারবে। এ ছাড়া কৃষি ব্যাংকের মূল্যবান তথ্য সঠিকভাবে রক্ষা করার যোগ্যতা এবং দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে দাবি করেছে হ্যাকাররা।