সুহানা অ্যান্ড আনিস আহমেদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ
১০ মাসে বিনা মূল্যে চোখ পরীক্ষার সুযোগ পেল ৬ হাজারের বেশি শিশু
সুহানা অ্যান্ড আনিস আহমেদ ফাউন্ডেশনের (এসএএএফ) উদ্যোগে দেশে ১০ মাসে ৬ হাজারের বেশি শিশুর বিনা মূল্যে চোখ পরীক্ষা করা হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে এ কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ‘দৃষ্টিভ্যান মোবাইল আই ক্লিনিক’ শিরোনামে এ সেবা চালু হয়। এ পর্যন্ত দেশের ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকের মাধ্যমে এই চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলে দিনব্যাপী একটি ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। আজ রোববার এসএএএফ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘দৃষ্টিভ্যান’ ক্যাম্পেইনের পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ১৫ জন অভিজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসক ও অপটোমেট্রিস্ট (দৃষ্টিবিশারদ)। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে গ্লকোমা শনাক্ত, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
পরীক্ষাকৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৩ শতাংশের মধ্যে রিফ্র্যাকটিভ ত্রুটি (মায়োপিয়া, হাইপারমেট্রোপিয়া ও অ্যাস্টিগমাটিজম), ১ দশমিক ১২ শতাংশ সন্দেহভাজন গ্লকোমা এবং শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশের চোখে অ্যালার্জি শনাক্ত হয়েছে। প্রায় ৯০০ শিক্ষার্থীকে চশমা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসব রোগীর মধ্যে জটিল চক্ষু সমস্যায় আক্রান্তদের বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসার খরচ বহন করেছে এসএএএফ।
ক্যাম্পেইন বিষয়ে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আনিস আহমেদ বলেন, ‘আমরা এমন এলাকা থেকে কার্যক্রম শুরু করতে চাই, যেখানে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া কঠিন। আমাদের দুটি ভ্যানে গ্লকোমা নির্ণয়ের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। পুরো কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অভিজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসক, অপটোমেট্রিস্ট ও মাঠপর্যায়ের পেশাজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দক্ষ দলের তত্ত্বাবধানে।’
শনিবারের ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের গ্লকোমা বিভাগের জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট শামিরা পেরেরা। তিনি ‘দৃষ্টিভ্যান’ ক্লিনিকের পরিচালন পদ্ধতি, যন্ত্রপাতি এবং সম্ভাব্য গ্লকোমা রোগীদের পর্যবেক্ষণ করেন।
শামিরা পেরেরা বলেন, স্কুলে সরাসরি চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে শুধু চিকিৎসা নয়, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যেও সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চোখের সুরক্ষায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
চিকিৎসাসেবা নেওয়া এক শিক্ষার্থী জানায়, প্রতিটি রোগীর জন্য চিকিৎসকেরা প্রায় ৩০ মিনিট সময় দিচ্ছেন এবং মনোযোগসহকারে শুনে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ সেবায় তারা সন্তুষ্ট।