নতুন ফ্রিজ ঘরে আনার পর এই বিষয়গুলো খেয়াল করুন

নতুন ফ্রিজ বাসায় এনেই চালু করে দেওয়া যাবে নাছবি: সংগৃহীত

ঘরে আসবে নতুন ফ্রিজ। খুশির শেষ নেই। পরিবারের সব সদস্য মিলে করছেন নানা পরিকল্পনা। ফ্রিজটি কোথায় রাখা হবে, কোনদিকে ঘোরানো থাকবে ইত্যাদি। ফ্রিজ কেনার পর বাসায় নিয়ে এসে আর অপেক্ষা করতে মন সায় দেয় না। কিন্তু এখানেই দরকার অপেক্ষা; পরিকল্পনামাফিক ফ্রিজটি স্থাপন করা।

নতুন ফ্রিজ বাসায় এনেই চালু করা যাবে না। সঠিক নিয়মে এর ব্যবহার শুরু করতে হবে। শুরুতেই ফ্রিজ চালুর বিষয়ে ভুল করলে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। ফ্রিজ ব্যবহারের কিছু নিয়মকানুন আছে, যা সঠিকভাবে মেনে চললে গৃহস্থালি এই পণ্য নিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হবে না।

নতুন ফ্রিজ বাসায় আনার পর এর সংযোগ এবং এটি চালু করার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন এমইপি গ্রুপের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার জেমস টুটুল মণ্ডল। চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

সংযোগ দিতে হবে সময় নিয়ে

নতুন ফ্রিজ কেনার পর সেটি বেশির ভাগ সময় বাড়িতে আনতে গাড়ি বা ভ্যান ব্যবহার করা হয়। বাসায় এনেই সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে বিদ্যুতের লাইন দিয়ে চালু করা যাবে না। সবার আগে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কারণ, ফ্রিজ যখন গাড়ি বা ভ্যানে করে নিয়ে আসা হয়, তখন ঝাঁকুনিতে এর ভেতরের গ্যাস সংকুচিত হয়। এ কারণে বাসায় আনার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ–সংযোগ দিয়ে চালানো শুরু করলে গ্যাসলাইন বন্ধ হয়ে ফ্রিজের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নতুন ফ্রিজ বাসার এনে কয়েক ঘণ্টা পর চালু করতে হবে।

সঠিক স্থান নির্বাচন

বাসায় নতুন ফ্রিজটি কোথায় রাখা হবে, সেটি আগেই নিশ্চিত করতে হবে। ফ্রিজের ভালো সেবার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রিজ রাখার জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে ফ্রিজ রাখলে নড়াচড়া করবে না অর্থাৎ স্থায়ীভাবে রাখা যাবে। আবার দেয়ালের সঙ্গে ঘেঁষেও রাখা উচিত নয়। সব সময় দেয়াল থেকে একটু দূরে রাখতে হবে। গরম স্থান বা সরাসরি রোদ আসে, এমন জায়গায়ও ফ্রিজ রাখা ঠিক নয়। ফ্রিজ সব সময় খোলামেলা জায়গায় রাখতে হবে।

মাল্টিপ্লাগ হতে হবে ভালো মানের

ফ্রিজ কিনে এনে অনেকেই প্রথমে যে ভুলটা করেন, সেটি হলো যেকোনো ধরনের মাল্টিপ্লাগ ব্যবহার করে ফ্রিজ চালু করে দেওয়া। ফলে অল্পদিনের মধ্যে ফ্রিজের মাল্টিপ্লাগ গরম হয়ে পুড়ে গলে যায়। তাই মনে রাখতে হবে, যে মাল্টিপ্লাগের সঙ্গে নতুন ফ্রিজের বৈদ্যুতিক সংযোগ দেবেন, সেটি অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে। ভালো মানের ৩/২০ তারের সরাসরি বোর্ড সংযোগ করে নতুন ফ্রিজটি চালু করতে হবে।

ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার

লোডশেডিং ফ্রিজের জন্য হুমকিস্বরূপ। এতে ফ্রিজের গুরুতর সমস্যা হতে পারে। নতুন কেনা ফ্রিজে ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করে ফ্রিজকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। বর্তমানে প্রায় সব ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটরেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দেখা যায়। অটো কুলিং সিস্টেম আপডেট, কম্প্রেসার আপডেট, ফ্রিজের গ্যাস আপডেট ইত্যাদির কারণে বর্তমানে ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারের ব্যবহার তুলনামূলক কম। তবে যাঁরা ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করতে চান, তাঁদের আগে থেকেই এটার ব্যবহার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

আরও যা খেয়াল রাখতে হবে

বাসাবাড়ির বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং ঠিক আছে কি না, তা ভালো মিস্ত্রি দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। আর্থিং সিস্টেম না থাকলে তা করিয়ে নিতে হবে। এটি শুধু ফ্রিজের জন্যই নয়, বাসার সবার নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আর্থিং না থাকার কারণে প্রতিবছর বহু মানুষ হতাহত হয় এবং অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে।

মাল্টি বোর্ড বা দুর্বল সকেট অথবা ঢিলেঢালা সংযোগ দিয়ে ফ্রিজ চালানো যাবে না।

ইনার কনডেনসারযুক্ত ফ্রিজের বাইরের অংশ গরম হতে পারে। এতে ফ্রিজের কোনো ক্ষতি হয় না; বরং এর ফলে ফ্রিজের বাইরের অংশ ঘামবে না।