সময়ের মুখ

ইঁদুর মারলে মানুষের উপকার হয়

ফসল রক্ষায় ১৯৮৩ সাল থেকে ইঁদুর নিধন অভিযান পরিচালনা করে আসছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। সংস্থাটির হিসাবে ২০২২ সালে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ ইঁদুর মেরে প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মেট্রিক টন ফসল রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৯৪ কোটি টাকা। ১২ হাজার ৫৮৯টি ইঁদুর মেরে তার লেজ জমা দিয়ে ফেনী জেলায় প্রথম ও চট্টগ্রাম বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছেন সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের দশপাইয়ার মো. হোসেন আহম্মদ। ইঁদুর নিধনে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত পুরস্কার জিতেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আমজাদ হোসেন

মো. হোসেন আহম্মদ
প্রশ্ন:

কেমন আছেন?

মো. হোসেন: শরীরটা ভালো নেই, গা ব্যথা।

প্রশ্ন:

ইঁদুর মারতে যেতে পারছেন না নিশ্চয়ই?

মো. হোসেন: কয়েক দিন ধরে যাই না।

প্রশ্ন:

কখন ইঁদুর মারেন, দিনে না রাতে?

মো. হোসেন: রাতেই বেশি।

প্রশ্ন:

কী দিয়ে ইঁদুর মারেন?

মো. হোসেন: বাঁশের খাঁচার ফাঁদ তৈরি করি। ফাঁদে শুঁটকি ও আটার রুটি দিই।

প্রশ্ন:

বয়স কত হলো?

মো. হোসেন: আশি ছাড়িয়েছে।

প্রশ্ন:

কত বছর বয়স থেকে ইঁদুর মারেন।

মো. হোসেন: ২০ বছর হবে।

প্রশ্ন:

কী মনে করে ইঁদুর মারা শুরু করেছেন?

মো. হোসেন: ইঁদুর ফসল ও কৃষকের প্রধান শত্রু। এ কারণেই ইঁদুর মারা শুরু করি।

প্রশ্ন:

ফেনীর বাইরে অন্য কোথাও যান?

মো. হোসেন: না, নিজের এলাকাতেই থাকি।

প্রশ্ন:

ইঁদুরের উৎপাত তো কমার কথা।

মো. হোসেন: কমেছে তো। কিন্তু ইঁদুর বাড়তে তো সময় লাগে না।

প্রশ্ন:

মানুষ কী বলে?

মো. হোসেন: কেউ ভালো বলে, কেউ টিটকারি মারে। লোকে কী বলে, তা শোনার সময় নেই।

প্রশ্ন:

কেউ ইঁদুরের উৎপাত বাড়লে আপনাকে ডাকে?

মো. হোসেন: ডাকে তো। আমি গিয়ে ফাঁদ পেতে ইঁদুর মেরে দিই।

প্রশ্ন:

পারিশ্রমিক দেয়?

মো. হোসেন: আমি টাকা নিই না।

প্রশ্ন:

ইঁদুর মেরে কী করেন?

মো. হোসেন: লেজগুলো রেখে দিই। সেগুলো জমা দিতে হয়।

প্রশ্ন:

সন্তান কয়জন?

মো. হোসেন: দুই ছেলে, দুই মেয়ে। ছেলেরা বিদেশে থাকে। মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে।

প্রশ্ন:

ছেলেমেয়েরা ইঁদুর মারা নিয়ে কী বলে? নিষেধ করে?

মো. হোসেন: না, নিষেধ করে না। ইঁদুর মারলে মানুষের উপকার হয়।

প্রশ্ন:

ইঁদুর মারা অন্যদের শেখান?

মো. হোসেন: শেখাই। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপজেলা, জেলা প্রশাসন থেকে ডাকা হয়।

প্রশ্ন:

যাতায়াতের খরচ?

মো. হোসেন: প্রশাসন থেকেই দেয়।

প্রশ্ন:

আর কত দিন ইঁদুর মারবেন?

মো. হোসেন: যত দিন পারি, যত দিন শরীরে কুলায়।