কঠিন সময়ে এভিয়েশন খাত, সরকারের নীতিসহায়তা চান উদ্যোক্তারা

‘এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ: প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করে এওএবি। দ্য ডেইলি স্টার ভবন, ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

দেশের এভিয়েশন খাত কঠিন সময় পার করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ এবং এই খাতের উন্নয়নে সরকারের নীতিসহায়তা চেয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। আজ বৃহস্পতিবার এ খাত নিয়ে এক কর্মশালায় এই সহায়তা কেন জরুরি, সেটি তুলে ধরেছে এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, দেশের এভিয়েশন খাতের সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের। এগুলোর সমাধানে এ খাতের উদ্যোক্তাদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

আজ এওএবি ‘এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ: প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে দ্য ডেইলি স্টার ভবনে।

কর্মশালায় দেশের বেসরকারি আকাশ পরিবহন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, প্রায় দুই বছর করোনার অভিঘাতের ফলে যে ক্ষতি হয়েছে, সেটি এখনো দেশীয় বিমান সংস্থাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এর মধ্যে উড়োজাহাজের জ্বালানি তেলের (জেট ফুয়েল) দাম প্রতি মাসে বেড়ে চলছে। ফলে বিমান সংস্থাগুলো ও হেলিকপ্টার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন ব্যয়ও অনেক বেড়ে গেছে। এ ছাড়া সরকারি মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সঙ্গে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর অসম প্রতিযোগিতা, যন্ত্রাংশ কেনা ও মেরামতের ক্ষেত্রে শুল্ক জটিলতা, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত উচ্চহারে বিভিন্ন ফি ও সারচার্জের ফলে এ খাতের উদ্যোক্তাদের মহাসংকটে ফেলেছে।

বক্তারা বলেন, এ খাতের উদ্যোক্তারা সেবার মান উন্নত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। কিন্তু এই খাতসংশ্লিষ্ট বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আন্তরিক হতে হবে। নীতিসহায়তার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে দ্রুত সমাধান করা হলে দেশের সম্ভাবনাময় এই খাত সম্প্রসারিত হবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বেসরকারি খাতের দেশীয় আকাশ পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন এওএবির সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, এই খাত প্রচুর সম্ভাবনাময়। কিন্তু পদে পদে প্রতিবন্ধকতা। এত প্রতিবন্ধকতা অন্য কোনো দেশে নেই।

এওএবির সাধারণ সম্পাদক ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, নীতিগত সমস্যার কারণে দেশীয় বিমান সংস্থাগুলো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে উড়োজাহাজের জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে দেশেও এক লাফে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশে সেভাবে কমে না। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক গন্তব্যের ফ্লাইট যে দামে তেল কেনে, অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের ফ্লাইটে তার চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি দামে কিনতে হয়। এ রকম নানা অসামঞ্জস্য নীতি ও সংকটের কথা তুলে ধরেন তিনি।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ও ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক। এ খাতের বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য দেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, সাউথ এশিয়ান অ্যাভিয়েশন পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন) গুলজার হোসেন ও আরিরাং এভিয়েশনের এম শফিউদ্দিন কামাল প্রমুখ।