গাড়ি জব্দ ও আসামিকে আইনের আওতায় এনে আদালতকে জানাতে নির্দেশ

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক মা নিহত ও তাঁর দেড় বছরের শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও আসামিকে আইনের আওতায় এনে আগামী ৩ জুনের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই দিনটিকে আদেশের জন্যও রেখেছেন আদালত।

বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গাড়ি জব্দ ও আসামি গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে।

এর আগে ‘ময়মনসিংহে সড়কে নিহত সেই মা ও আহত শিশুর পরিচয় মিলেছে’ শিরোনামে ১২ মে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি পরদিন আদালতের নজরে আনেন মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। শুনানি নিয়ে ১৩ মে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন।

ওই ঘটনায় করা মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত, আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে এবং জড়িত যান জব্দের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার ও ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ২০ মে’র মধ্যে আদালতকে জানাতে  নির্দেশ দেওয়া হয়। শিশু কল্যাণ বোর্ডের মতামত সাপেক্ষে শিশুটিকে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য তার মামার হেফাজতে রাখতে বলা হয়। পাশাপাশি শিশুটির চিকিৎসার প্রয়োজন হলে অগ্রাধিকার দিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।

আগের ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ. কাইয়ুম, ভালুকা থানার ওসি শাহ কামাল ও তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত হয়ে পদক্ষেপ ও মামলার অগ্রগতি বিষয়ে পৃথক প্রতিবেদন দাখিল করেন।

আরও পড়ুন

আদালতে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল ইয়াসমিন বিথী শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহাব উদ্দিন টিপু ও মোহাম্মদ মজিবুর রহমান।

ওই দুর্ঘটনাসংশ্লিষ্ট সেই গাড়িটি জব্দ ও আসামিকে গ্রেপ্তার না করার কারণে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আদেশের বিষয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত গাড়ি ও আসামিকে আইনের আওতায় এনে আগামী ৩ জুনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। এতে ব্যর্থ হলে ভালুকা থানার ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন আদালত। বিচারাধীন অবস্থায় আদালতকে অবহিত না করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা অভিযোগ আনা উচিত বলেছেন আদালত। তবে তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর করে আদালত তাঁকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করেছেন।’