সন্দ্বীপ থেকে জাহাজে চড়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে এসেছেন ৬৫ বছরের মানিক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরাসরি একবার দেখার আশায় সকাল সকাল চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে হাজির হয়েছেন ৬৫ বছরের মোহাম্মদ মানিক। জনসভা উপলক্ষে চালু করা বিশেষ জাহাজে চড়ে সন্দ্বীপ থেকে এসেছেন তিনি।
জীবিকার তাগিদে মোহাম্মদ মানিক অনেকটা সময় প্রবাসে ছিলেন। পাঁচ বছর আগে দেশে এসে থিতু হন। এই সময়ে চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর কোনো জনসভা হয়নি। তাই আওয়ামী লীগের নেত্রীকে দেখার ইচ্ছা পূরণ হয়নি।
অবশেষে আজ সে ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে বলেন মানিক। সকাল ৯টায় পলোগ্রাউন্ড মাঠের প্রবেশ ফটকের সামনে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মানিক বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগ। কত দিন ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু বিদেশে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এ জন্য খুব আক্ষেপ ছিল। এখন নেত্রী আসছেন। শরীরও ভালো না। তারপরও সবার সঙ্গে জাহাজে করে শহরে চলে আসছে তাঁকে (প্রধানমন্ত্রী) দেখার জন্য। আজকে তাই খুব আনন্দ হচ্ছে।’
সন্দ্বীপের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উন্নয়ন করেছেন বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মোহাম্মদ মানিক।
মানিকের পাশে বসা ৬০ বছর বয়সী মো. জাফর ইসলাম বলেন, সন্দ্বীপের জন্য অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে আরেকটি উন্নয়নকাজ খুব জরুরি। সেটি হচ্ছে ফেরিঘাটের উন্নয়ন। ফেরিঘাট নিয়ে সন্দ্বীপের মানুষ খুব কষ্টে আছেন। এটি হয়ে গেলে সন্দ্বীপের উন্নয়ন পূর্ণতা পাবে। তাঁদেরও আর কোনো চিন্তা থাকবে না।
শুধু মোহাম্মদ মানিক বা জাফর ইসলাম নন, তাঁদের অনেকেই এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায়। প্রায় ১১ বছর পর চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সকাল থেকে নেতা–কর্মীরা ফেস্টুন নিয়ে, বাদ্য বাজিয়ে, মিছিল নিয়ে জনসভা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন।
মাথায় ছোট্ট নৌকা, শরীরে লাল-সবুজের পোশাক, এই বেশে জনসভায় হাজির হয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী। শরীয়তপুরের এই বাসিন্দা থাকেন ঢাকায়। তবে যেখানে শেখ হাসিনার জনসভা হয় সেখানে ছুটে যান বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ফৌজদারহাট থেকে এসেছিলেন আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, অনেক দিন পর চট্টগ্রামে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই একবার দেখার জন্য চলে এসেছেন পলোগ্রাউন্ডে। তাঁরা এলাকা থেকে দল বেঁধে জনসভায় এসেছেন।
চট্টগ্রামের জন্য কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, উড়ালসড়ক, অর্থনৈতিক অঞ্চল, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আমলে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল মানুষ পাচ্ছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানুষ কৃতজ্ঞতা জানান চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের মতন আর কোনো সরকার গুরুত্ব দেয়নি। তারপরও আরও উন্নয়ন প্রয়োজন আছে।
গোলম কিবরিয়া আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা থাকবে যাতে আজকের জনসভায় উন্নয়নকাজের ব্যাপারে কোনো ঘোষণা দেন। উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। আজকের জনসভায় তাই নেতা-কর্মীরা উৎসাহ নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন।