আরব আমিরাতে বন্দী ২৫ জনের শিগগিরই মুক্তি, আশাবাদী সরকার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক প্রবাসীদের মধ্য থেকে ১৮৮ জন দেশে ফিরে এসেছেন। এরপরও দেশটির আবুধাবি কারাগারে বন্দী আছেন ২৫ জন। তাঁদের মুক্তির বিষয়ে কূটনৈতিক ও আইনি প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। শিগগিরই তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী সরকার।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে আজ বৃহস্পতিবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ২৫ জনের পাসপোর্টের কপি ও ভিসা নম্বর চাওয়া হয় দূতাবাসের কাছে। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সব তথ্য, নোট ভারবাল আকারে (কূটনৈতিক পত্র) গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাদের পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ৭ আগস্ট আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ২৫ জন বন্দীর তালিকাসহ যোগাযোগের সব তথ্যসংবলিত হার্ড কপি হস্তান্তর করেন। এ কার্যক্রমকে দ্রুত এগিয়ে নিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর আমিরাতের মিনিস্টার অব জাস্টিস আবদুল্লাহ বিন সুলতান বিন আওয়াদ আল নোয়ামির কাছে একটি অনুরোধপত্র পাঠান প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি বলছে, অবশিষ্ট বন্দীদের মুক্তির জন্য গত ২২ এপ্রিল উদ্যোগ নেয় আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাস। এরই ধারাবাহিকতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি তালিকা পাঠিয়ে তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে সহযোগিতা চাওয়া হয়। মে মাসে আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সেখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি ইতিপূর্বে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানে ছাড় পাওয়া ১৮৮ জনের মতো আটক অবশিষ্ট ব্যক্তিদেরও মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপরও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় গত ১ জুলাই দূতাবাস থেকে আরেকটি নোট ভারবালের মাধ্যমে বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে কনস্যুলার এক্সসেস চাওয়া হয়।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে গত ৮ জুলাই হামদান আল কাবি নামের একটি আইনি প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করা হয়। আইনি প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা–সম্পর্কিত মামলা থাকায় আইনি পদক্ষেপগুলো সময়সাপেক্ষ। বিষয়টি সুরাহার জন্য রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করে সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে দূতাবাসকে নিয়মিত অবহিত করছে আইনটি প্রতিষ্ঠানটি।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। দেশটিতে বিক্ষোভের ঘটনায় প্রথম দফায় আটক ৫৭ জনের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর ও একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। পরে গত বছরের ২৮ আগস্ট দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বাংলাদেশিদের সাজা মওকুফের অনুরোধ জানান। এতে সাড়া দেয় আমিরাত সরকার। পরে কারামুক্ত হয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশে ফিরতে শুরু করেন প্রবাসীরা।

আরও পড়ুন