প্রতীক পাওয়ার দুই দিন পর এলাকায় ইনু, পাশে নেই আওয়ামী লীগের নেতারা

সোলেমান শাহের মাজার জিয়ারত শেষে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন জাসদ সভাপতি ও নৌকার প্রার্থী হাসানুল হক ইনু। বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর ও ভেড়ামারা) আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ফিরেছেন।

প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার দুই দিন পর ঢাকা থেকে গাড়িতে আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে তিনি ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগরে নিজ বাড়িতে আসেন। তবে পাশে পাচ্ছেন না স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের।

এ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হাসানুল হক ইনু। তাঁর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদস্যপদত্যাগী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন। তিনি ট্রাক প্রতীক নিয়ে দুই দিন ধরে মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন।

কুষ্টিয়া-২ আসনে জাসদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। তবে জাসদের প্রতীক মশালে নয়, আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা দিয়েই প্রতিবার নির্বাচন করেছেন তিনি। জাসদের প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতার কারণে এবারও তিনি নৌকা প্রতীক পেয়েছেন।

স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, দুটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে জাসদ নেতাদের বিরোধের কারণে এখানে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশ ভালো অবস্থানে আছেন। দুটি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা-কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিনের পক্ষে কাজ করছেন।

মিরপুর উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, কিছু নেতা বিরোধিতা করছেন। এতে জোটের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। পোস্টার এখনো টানানো হয়নি। পোস্টার এসে গেছে, আজ সন্ধ্যায় টানানো হবে। কাল (বৃহস্পতিবার) মিরপুর উপজেলায় প্রচারণা শুরু হবে।

জাসদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোলেমান শাহের মাজার জিয়ারত করে আজ বিকেলে হাসানুল হক ইনু ভেড়ামারা শহরের বাসস্ট্যান্ড মোড়ে জনসভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন।

প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার দুই দিন পর হাসানুল হক ইনুর এলাকায় ফেরার বিষয়ে ভেড়ামারার বাসিন্দা ও কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় রাজনীতি করেন তিনি (ইনু)। দলের আরও প্রার্থী আছেন, তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় করে তিনি এলাকায় এলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা আমাদের সঙ্গে আছেন। তবে কিছু শীর্ষ নেতাদের কারণে একটু বেগ পেতেই হচ্ছে। তাঁদের কারণে বিভ্রান্তি হচ্ছে। আগের নির্বাচনেও তাঁরা বিরোধিতা করেছেন। এবারও করছেন। বিষয়টি জোটের শীর্ষ নেতাদের জানানো হবে।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘এই নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, কোনো ভোট ডাকাতি হবে না। এখানে কোনো মাস্তানি হবে না এবং ভোটের কেন্দ্রে কোনো কারচুপি হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না আসুক, কিন্তু যেটুকু ভোট হচ্ছে, সেটুকু মাস্তানমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও কারচুপিমুক্ত হতে হবে।’

ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিঠু প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসন নিরপেক্ষ আছে। মাঠে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ থাকবে। কার সাহস আছে, ভোট ডাকাতি করবে, মাস্তানি করবে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও জনগণ যে ভোট দেবে, তাতে আমাদের প্রার্থী (কামারুল) বহু ভোটে এগিয়ে থাকবেন।’