নিজের বদলে হাঁসের ছবি জুড়ে দিয়ে হাসালেন পিটার হাস

রাজধানীর মহাখালীতে বিওয়াইএলসির দপ্তরে বৃহস্পতিবার তরুণ সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় অপতথ্য ও তথ্য যাচাই নিয়ে বক্তব্যের সময় নিজের জায়গায় হাঁসের ছবি দিয়ে হাস্যরসের অবতারণা করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তথ্য যাচাই নিয়ে তরুণ সাংবাদিকদের একটি কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে একপর্যায়ে পিটার হাস নিজের জায়গায় হাঁসের ছবি জুড়ে দিয়ে হাসির খোরাক জুগিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে বিওয়াইএলসির দপ্তরে ওই কর্মশালায় ভুল ও অপতথ্যের বিষয়ে পিটার হাস নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময় করছিলেন। বক্তৃতায় একপর্যায়ে তিনি নিজের জীবনীতে নিজের জায়গায় স্যুট-টাই পরা হাঁসের ছবি দিলে কেমন হবে, তা স্ক্রিনে দেখান। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হাসতে হাসতে বলেন, ‘যেহেতু আমরা কিছু মজা করতেই পারি...আপনি যদি একটি খবর দেখেন যে যেটাতে বলা হচ্ছে—আমি আমার অফিশিয়াল জীবনীতে পোর্ট্রেট পরিবর্তন করছি এবং এটা দেখতে এই রকম। এটা রাষ্ট্রদূত হাঁস নয়, এটা রাষ্ট্রদূত হাস।’

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাঁর দেশের এ অবস্থান বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশীজনের কাছে তুলে ধরেছেন। নির্বাচনের আগে পিটার হাসকে নিয়ে কথা বলার সময় ‘হাঁস’ মিলিয়ে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। নিজের নামের উচ্চারণের সঙ্গে যে হাঁসের মিল রয়েছে, তা অনুষ্ঠানে হাসিচ্ছলে তুলে ধরেন পিটার হাসও।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আয়োজনে তিন দিনের টেকক্যাম্প কর্মশালায় ৫০ জন তরুণ সাংবাদিককে ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই, তথ্য যাচাই এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সর্বোত্তম অনুশীলন সম্পর্কে শেখানো হয়।

গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (জিওয়াইএলসি) ইনকরপোরেটেডের সঙ্গে অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো এই টেকক্যাম্পের আয়োজন করে।

কর্মশালার শেষ দিনে বক্তব্য দিতে গিয়ে নানা ভুয়া ও ভুল তথ্যের কারণে নিজের বিড়ম্বনায় পড়ার কথা জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের আলোচনার পর তাঁর বক্তব্য যে যথাযথভাবে গণমাধ্যমে উঠে আসে না, তা উল্লেখ করেন তিনি।

পিটার হাস বলেন, ‘এখানে আমি প্রায়ই দেখি, লোকজন আমার সঙ্গে বৈঠক করে যায় এবং আমি পরদিন পত্রিকায় দেখি, পিটার হাস এক্স-ওয়াই-জেড বলেছেন অথচ আমি এমন কিছুই বলিনি। কেউ আমাদের সঙ্গে ফ্যাক্টচেক করে না এবং বলে না—আপনি কি সত্যি সত্যি এটা বলেছেন? অথবা আপনি কী বলেছেন? এটা একটা বড় উদাহরণ। কোনো কোনো সময় এটা ক্ষতিকর হয়।’

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নামে অন্তত ১০টি ভুয়া ফেসবুক পেজ, তাঁর নিজের নামে ভুয়া এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নামে ভুয়া ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থাকার বিষয়গুলো তিনি উল্লেখ করেন।

ভুয়া ব্যক্তির নামে বাংলাদেশে নিবন্ধ ও খবর প্রকাশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কথা তুলে ধরে পিটার হাস বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যুক্তরাষ্ট্রও এর থেকে বাইরে নই। মিথ্যা তথ্য ও অপতথ্যের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে।’