মেয়ের অস্ত্রোপচারে সুগন্ধার পাশে দাঁড়াতে চান অনেকে

আলমারির এই ড্রয়ারে মেয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য টাকা রেখেছিলেন সুগন্ধা দাস। ঘরে লাগা আগুনে সেই টাকা পুড়ে ছাই হয়েছেছবি: জুয়েল শীল

মেয়ের অস্ত্রোপচারের জন্য ঘরে এনে ৫০ হাজার টাকা রেখেছিলেন সুগন্ধা দাস। কিন্তু ঘরে লাগা আগুনে ছাই হয়ে যায় সেই টাকা। চট্টগ্রাম নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার টেকপাড়ায় পোড়া ভিটার সামনে দাঁড়িয়ে মেয়ে অর্পিতাকে জড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন অসহায় মা। এমন দুঃসময়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর জন্য এগিয়ে এসেছেন অনেকে।

প্রথম আলোর অনলাইনে সোমবার রাতে ‘মেয়ের অস্ত্রোপচারের টাকা পুড়েছে আগুনে, পুড়েছে আশা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ওই পরিবারকে সাহায্য করার জন্য ফোন আসতে থাকে।

এই প্রতিবেদন চোখে পড়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের। তিনি মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় অর্পিতার চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা দিতে যাবেন বলে জানা গেছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম আলোর প্রতিবেদন দেখার পর ডিসি মহোদয় মঙ্গলবার টেকপাড়ায় অগ্নিদুর্গত পরিবারটির মেয়েটিকে সহায়তা দিতে যাবেন। একই সঙ্গে অন্য দুর্গতদেরও খোঁজখবর নেবেন।’

চট্টগ্রাম বন্দরের অস্থায়ী কর্মী সুগন্ধার স্বামী বেঁচে নেই। তাঁর এক ছেলে এক মেয়ে। নবম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে অর্পিতার পেটে টিউমার। বন্দর হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ জন্য ৫০ হাজার টাকা ঘরে এনে রেখেছিলেন। কিন্তু আগুনে সে টাকা পুড়ে যায়।

আগুন লাগার সময় সুগন্ধা মেয়ের সঙ্গে বন্দর হাসপাতালে ছিলেন। বাড়িতে আগুন লাগার খবরে মেয়েও আর হাসপাতালে থাকতে চায়নি। মায়ের সঙ্গে অর্পিতাও হাতে ক্যানুলাসহ পোড়া ভিটার সামনে এসে দাঁড়ায়। মা সুগন্ধা বিলাপ করছিলেন মেয়ের অস্ত্রোপচারের টাকা পুড়ে যাওয়ায়।

আরও পড়ুন

এদিকে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর মালয়েশিয়া থেকে এক ব্যক্তি প্রথম আলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনিও মেয়েটিকে আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশসহ আরও কমপক্ষে ছয়জন সহায়তার বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

সোমবার দুপুরে টেকপাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সুগন্ধাদের ঘরের পাশের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়। ফায়ার সার্ভিসের নয়টি গাড়ির চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নেভে বিকেল চারটায়।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ বলেন, আগুনের ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তবে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ জানান, আগুনে ২০০টি ঘর পুড়ে গেছে।