মিরপুরে সুখবর, ৬০ ফিট সড়কের ‘চিকেন নেকে’ সমাধান আসছে

৬০ ফিট সড়কের শেষ মাথায় স্থাপনা সরানোর কাজ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। আজ বৃহস্পতিবারছবি: উত্তর সিটির সৌজন্যে

মিরপুরবাসীর দুঃখ ৬০ ফিট সড়কের শেষ মাথা, যেখানে সড়কটি হঠাৎ শেষ হয়ে গেছে। রাজধানীর আগারগাঁও থেকে ৬০ ফিট সড়ক ধরে যাওয়ার পর মানুষকে মিরপুর সড়কে ঢুকতে হতো সরু পথ দিয়ে। ফলে শেষ মাথায় যানজট লেগেই থাকত।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সমস্যাটির সমাধান করছে। গণপূর্ত, ডাক বিভাগ ও ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু জমি নিয়ে ৬০ ফিট সড়ক সংযুক্ত করা হচ্ছে মিরপুর ১০ থেকে ১ নম্বরগামী (মিরপুর রোড) সড়কের সঙ্গে।

উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৭ বছর সমস্যাটির কেউ সমাধান করেনি। আমরা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ক্ষেত্রে গণপূর্ত ও ডাক বিভাগ সহায়তা করেছে।’

মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, স্থাপনা সরানোর কাজ আজ শুরু হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আগেই কাজ শেষ করে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এটা হলে মিরপুরবাসীর দুর্ভোগ কমবে।

ঢাকার মধ্যাঞ্চল থেকে মিরপুরে যাওয়ার মূল পথ হলো বেগম রোকেয়া সরণি। এই পথ দিয়েই বাস মিরপুর ১০, ১১ ও ১২ নম্বর সেকশনে যায়। কিছু বাস ১০ নম্বর হয়ে মিরপুর ১ নম্বর সেকশন ও চিড়িয়াখানার দিকে যায়।

আরেকটি রাস্তা হলো মিরপুর রোড, যেটি দিয়ে কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, আনসার ক্যাম্প ও মিরপুর ১ নম্বর হয়ে ১০ নম্বর ও অন্যান্য এলাকায় যাওয়া যায়। এ পথেও বাস চলাচল করে। তবে এ দুই পথের মাঝে একটি রাস্তা আছে, যেটি আগারগাঁও থেকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের সামনে দিয়ে গিয়ে মিরপুর ২ নম্বর সেকশনে গিয়ে মিলেছে।

রাজধানীর মিরপুরে ৬০ ফুট সড়কের শেষ মাথায় স্থাপনা সরানোর কাজ করার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজসহ কর্মকর্তারা। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোর, ২০২৫)
ছবি: উত্তর সিটির সৌজন্যে

রাস্তাটি ৬০ ফিট সড়ক নামে পরিচিত। সমস্যা হলো, ৬০ ফিট সড়কের শেষ মাথা মিরপুর রোডের সঙ্গে মেলার আগেই শেষ হয়ে গেছে। শেষ মাথা থেকে একটি সরু সড়ক গেছে ডান দিকে, গন্তব্য মিরপুর ১০ নম্বরের দিকে। আরেকটি সড়ক গেছে বাঁ দিকে, যেটির গন্তব্য মিরপুর জনতা হাউজিংয়ের দিকে। মোড়টিতে দিনভর যানজট লেগে থাকে।

একটি চওড়া রাস্তা কোথাও সরু হয়ে গেলে তাকে ‘চিকেন নেক’ বলা হয়।

৬০ ফিট সড়ক সোজা মিরপুর রোডের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ছিল সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা।

উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা গণপূর্তের কাছ থেকে ১৬ শতাংশ ও ডাক বিভাগের কাছ থেকে ১৮ শতাংশ জমি নিয়ে রাস্তাটি মিরপুর রোডের সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছেন। কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি আছে। তাঁদের সরকারি হারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।

৬০ ফিট সড়কটির মাঝে ‘ডিভাইডার’ বা সড়ক বিভাজক রয়েছে। সম্প্রতি সড়কটি সংস্কার করা হয়েছে। এই সড়কের দুই পাশে আবাসিক এলাকা, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা রয়েছে। অসংখ্য মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। অনেকে মিরপুর ১০ নম্বর মোড়ের যানজট এড়াতে এই সড়ক ব্যবহার করেন।

রাজধানীর শেওড়াপাড়ার এক বাসিন্দার সন্তান পড়ে মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের একটি স্কুলে। ওই অভিভাবক নিজের সন্তানকে নিয়ে রিকশায় যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি দিন ৬০ ফিট সড়কের মাথায় গিয়ে আটকে থাকতে হয়। সরাসরি মিরপুর রোডের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার পর সড়কটি যানজট কমাতে আরও ভূমিকা রাখতে পারবে।