গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সিডিএতে আকস্মিক অভিযানে দুদক

বুধবার সকালে দুদকের হটলাইনে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিডিএ কার্যালয়ে যায় দুদকের একটি টিম। চট্টগ্রাম, ১৩ সেপ্টেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আজ বুধবার দুপুরে নগরের কোতোয়ালি মোড়ে অবস্থিত সিডিএ কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার সকালে দুদকের হটলাইনে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন। ওই ব্যক্তি জানান, সিডিএতে নকশা অনুমোদনের ফরমের সঙ্গে জমা দেওয়া টাকা কতিপয় কর্মচারী আত্মসাৎ করেছেন। তাঁরা ব্যাংকের সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতি করে গ্রাহকের জমা দেওয়া টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেরা ভাগ করে নিয়েছেন। এই অভিযোগে সিডিএতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

দুদকের কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, অভিযোগ করা হলেও তাতে সুনির্দিষ্ট কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি এবং তথ্যও দেওয়া হয়নি। তাই ঘটনার মূল কারণ জানতে গত এক বছরে কী পরিমাণ আবেদন ফরম জমা পড়েছে, এর তথ্য-উপাত্ত জমা দিতে বলা হয়েছে সিডিএকে। আর ব্যাংকের কাছ থেকেও এক বছরের হিসাব বিবরণী নেওয়া হবে। এরপর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

ব্যাংকের সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে গত মাসের শেষ সপ্তাহে। ভবন নির্মাণ করতে হলে সিডিএর কাছ থেকে নকশা অনুমোদন নিতে হয়। নকশা অনুমোদন ফরমের জন্য দুই হাজার টাকা এবং সিডিএর কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের জন্য ২০ টাকা করে জমা দিতে হয় আবেদনকারীদের। সাধারণত আবেদনকারীরা হয়রানি এড়াতে সিডিএর কর্মচারীদের মাধ্যমে এই ফরম জমা দেন।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সিডিএর একশ্রেণির কর্মচারী আবেদনকারীদের কাছ থেকে টাকা নিলেও তা ব্যাংকে জমা দেননি। ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে স্লিপ আবেদন ফরমের সঙ্গে জমা দিতেন।

সিডিএর সার্ভিস ও ডেলিভারি সেন্টারের দায়িত্বরত কর্মী কামরুজ্জামান ও মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, আবেদনকারীরা যেভাবে ফরম জমা দেন, তাতে একটি নম্বর দিয়ে তা ওপরে পাঠিয়ে দেন। আবেদন ফরম যাচাই-বাছাই করার সুযোগ তাঁদের নেই।

সিডিএর অথরাইজড কর্মকর্তা মো. হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কিছুদিন আগে নকশার আবেদন ফরম যাচাই করতে গিয়ে দেখেন ব্যাংক স্লিপে স্ক্রল নম্বর নেই। এ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। পরে আরও কিছু ফরম যাচাই করে একই অবস্থা দেখতে পান। এতে জালিয়াতি হয়েছে বলে তাঁদের মনে হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে দুদকের অভিযানে সিডিএর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে দাবি করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নকশা অনুমোদন নিয়ে হয়রানির অভিযোগ ঠিক নয়। হয়তো কেউ ফরমের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে পারেন না বলে অনুমোদন পেতে সময় লাগে। ব্যাংক স্লিপ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে দুদককে সহযোগিতা করা হবে। এ ঘটনায় সিডিএ তদন্ত করছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।