স্তন ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব

প্রতীকী ছবি

প্রাথমিক ধাপে স্তন ক্যানসার ধরা পড়লে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই ক্যানসার হওয়ার পর নয়, বরং আগে থেকে নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে স্তন ক্যানসারের রোগীরা যাতে প্রয়োজনমতো চিকিৎসাসেবা পান, সে জন্য সরকারের আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ সোমবার এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ক্যানসার সচেতনতায় কাজ করা ৩৫টি সংগঠনের জোট বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। স্তন ক্যানসার সচেতনতা কার্যক্রমের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজন করা হয় এ সভা।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ‘স্তন ক্যানসার প্রাথমিক অবস্থার ধরা পড়লে আমরা শতভাগ সুস্থ থাকতে পারি।’ এ রকম অনেক উদাহরণ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সময়ের পরিক্রমায় নারীর শরীরে পরিবর্তন আসবে। এ নিয়ে ভীত হওয়া যাবে না; অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।

নাছিমা বেগম স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত তাঁর গ্রামের এক রোগীর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকেরা আন্তরিক হলেও দালালের কারণে গ্রাম থেকে আসা রোগীদের পরীক্ষায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা যায়, লাইন শেষ করে জায়গামতো পৌঁছাতে ছয়-সাত দিন লেগে যায়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা উচিত।

বিএসএমএমইউয়ের সহ-উপাচার্য ছয়েফ উদ্দিন বলেন, অনেক রোগী স্তন ক্যানসারের বিষয়টি গোপন রাখতে চায়। তাই তাঁদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে রোগীর গোপনীয়তা রক্ষায় দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে।

স্তন ক্যানসার প্রতিরোধের ওপর জোর দেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নারী-পুরুষ উভয়ের স্তন ক্যানসার হতে পারে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করতে হবে, আঁশযুক্ত খাবার প্রাধান্য দিতে হবে।

স্বপন কুমার এ-সংক্রান্ত সচেতনতা কার্যক্রমকে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িতে দিতে ও স্তন ক্যানসার সচেতনতায় উপজেলা হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মোজাহেরুল হক, ডা. আবু জামিল ফয়সল, ডা. আবদুস সবুর, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফরিদ হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতামূলক প্রতিবেদন ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ১০ সাংবাদিককে সম্মাননা দেওয়া হয়।