হিন্দু নারীদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করার দাবি

বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ আয়োজিত প্রথম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন
ছবি: শুভ্রকান্তি দাশ

হিন্দু আইনে বিবাহবিচ্ছেদ নেই। যে কারণে হিন্দু নারীর দ্বিতীয় বিয়ে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী অবৈধ। অন্যদিকে বনিবনা না হলেও অনেকে বাধ্য হয়ে স্বামীর সংসারে থাকেন। আবার কোনো নারী স্বামীর সংসার থেকে বেরিয়ে গেলেও দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন না। তাঁকে বাধ্য হয়ে একাকী জীবন কাটাতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে হিন্দু নারীদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের প্রথম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তিনি বলেন, ভারতে হিন্দু পুরুষদের বহুবিবাহ নিষিদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো হিন্দু পুরুষদের জন্য বহুবিবাহ নিষিদ্ধ নয়। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে হিন্দু আইন সংশোধন হয়নি। এই আইনের আওতাভুক্ত সব নারী ও লিঙ্গবৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী নিদারুণ বৈষম্যের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে। শুধু নারী হয়ে জন্মানোর কারণে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে হয়, যা আধুনিক পৃথিবীতে এক অবিশ্বাস্য সত্য।

হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পুলক ঘটক বলেন, যেকোনো কারণেই কারও সংসার না-ও টিকতে পারে। হিন্দু আইন অনুযায়ী, পুরুষেরা দ্বিতীয় বিয়ে করলে সমস্যা নেই। কিন্তু ভুক্তভোগী ওই নারী আর বিয়ে করতে পারবেন না। যদি বিয়ে করতে চান, আইনত সেই বিয়ে অবৈধ। এই বাস্তবতা খুবই কঠিন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুন নূর, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের সভাপতি ময়না তালুকদার।  

অনুষ্ঠানে ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলেও তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেননি। কারণ, এ ধরনের কোনো সুযোগ তাঁর জানামতে নেই। আবার নিজেও দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেননি। কারণ, বিয়ে করার আইনগত অধিকার নেই।

ভুক্তভোগী আরেক নারী বলেন, স্বামী তাঁকে নির্যাতন করলেও আইনগতভাবে বিচ্ছেদের সুযোগ পাননি। স্বামীর সংসার ছেড়ে এখন একাকী জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।