সরকার দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে: মির্জা ফখরুল

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: সামছুর রহমান

সরকার দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এই অভিযোগ করেন। এর আগে দলটির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি নির্ধারণের বিষয়ে যৌথসভা হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিও তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমি আপনাদের একটি আশঙ্কার কথা বলি, এটা বলা দরকার, জাতির জানা উচিত। সরকার দেশে ভয়াবহ কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা করছে, যাতে নির্বাচনে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করা যায়। তারা আরেকটি নির্বাচন করতে চায়, যেমন অতীতে করেছে।’

গতকাল রোববার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ছাত্রদলের ৬ নেতাসহ বিএনপির মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। এদিন রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবি দাবি করে, ছাত্রদলের ছয় নেতাকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা-নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তাঁরা অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে তাঁরা অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন।

ছাত্রদলের নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, অস্ত্রসহ তাঁদের আটক দেখানো হয়েছে। এগুলো (অস্ত্র) তাদের (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর) রেখে দেওয়া অস্ত্র। অর্থাৎ তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এগুলো করবে, গোলযোগ সৃষ্টি করবে, আর বিএনপির ওপর দোষ চাপাবে।

আগামী দুই মাসের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগ খাতের একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে মেট্রোরেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, পদ্মা সেতুর রেলসংযোগের মতো সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত (ফাস্টট্র্যাক) প্রকল্প রয়েছে। তেমনি আছে ঢাকার যানজট নিরসনে নেওয়া উড়ালসড়ক (একাংশ) এবং দেশে নদীর তলদেশে নির্মিত প্রথম টানেল প্রকল্পও। এসব প্রকল্পের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসেছে, ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। মেগা প্রকল্প, রেল প্রকল্প, ফ্লাইওভার—এগুলো কার জন্য? জনগণের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভরার জন্য। ৮০ পারসেন্ট চুরি করে, ২০ পারসেন্টে কোনোরকমে কাজ করে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি

আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সেদিন সকাল ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। সেখানে ফাতিহা পাঠও করা হবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। র‍্যালি ও আলোচনা সভার তারিখ, স্থান পরে জানানো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।