ঢাকায় ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় বিএনপির ১০ নেতা–কর্মীর সাজা

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলিম (নকি)
ফাইল ছবি

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে (২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস) রাজধানীর বনানীতে ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলিম নকিসহ দলটির ১০ নেতা–কর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডিত অপর ৯ আসামি হলেন বিএনপি নেতা মেহেদী হাসান মিশু, মিজান ব্যাপারী, মহব্বত আলী মোল্লা, আমিনুল ইসলাম হিমেল, আবদুল্লাহ আল মামুন, জয়নাল আবেদীন, রোকন শেখ, গিয়াস উদ্দিন ও শফিকুল ইসলাম। রায়ে আবদুল আলিম নকিসহ ১০ জনের প্রত্যেককে ২ বছর ৭ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় বিএনপির এসব নেতা–কর্মী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।

বিএনপি নেতা আবদুল আলিমের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে করা মামলায় বিএনপির ১০ নেতা–কর্মীর সাজা হয়েছে। তাঁরা ন্যায়বিচার পাননি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।

মামলার এজাহারের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বনানীর কামাল আতাতুর্ক রোডের প্রসাদ ট্রেড সেন্টারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির নামে উপস্থিত বিএনপির নেতা–কর্মীদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ছিল। হঠাৎ তাঁরা রাস্তার যানবাহন ভাঙচুর শুরু করেন, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে এলে বিএনপির নেতা–কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এই ঘটনায় বনানী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মিল্টন দত্ত বাদী হয়ে বিএনপি নেতা আবদুল আলিমসহ ৪৯ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন। বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় এই মামলা করা হয়।

পরে মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ মে বনানী থানার তৎকালীন এসআই আবদুল্লাহ আল মামুন বিএনপির ১০ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালসহ গণতান্ত্রিক সরকারকে ব্যঙ্গ করে বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছিলেন। সেদিন আসামিরা রাস্তায় যানবাহন ভাঙচুর করেন। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেন।

পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি আবদুল আলিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ছয়জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। ছয়জনের মধ্যে আছেন মামলার বাদী, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশ বাহিনীর ছয় সদস্য।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলিমের বিরুদ্ধে আরও ১০টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে নয়টি মামলা করা হয় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় গুলশান থানা, বনানী থানা, বাড্ডা থানা ও ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করে পুলিশ।