প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ প্রত্যাহার
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিতে চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে দাবি আদায়ে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
আজ রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ওয়ালি উল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাঁরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করার কথা জানান তিনি।
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি ওয়ালি উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি চলবে।’
এদিকে তিন দফা দাবি আদায়ে তৃতীয় দিনের মতো সকাল থেকেই ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাফিতি ও দ্রোহের যাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়। প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে এসব কর্মসূচি হয়।
পরে বিকেল পাঁচটার দিকে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা ও সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে অগ্রগতি জানতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে দেখা করেন শিক্ষার্থীদের একটি দল। সেখানে তাঁরা শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা, সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কয়েকটি বিভাগ ঘুরে দেখা যায়, কোথাও ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। বিভাগগুলোতে কোনো শিক্ষার্থী আসেননি। পুরো ক্যাম্পাস কার্যত ফাঁকা। তবে প্রশাসনিক ভবনসহ অফিসগুলো খোলা ছিল। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অফিসে ছিলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো নবম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী পদে কেবল পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ ও ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার করা; দশম গ্রেডে শুধু ডিপ্লোমাধারীরা আবেদন করতে পারেন, সেখানে যেন উচ্চ ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা এবং শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং যাঁরা সম্পন্ন করবেন, তাঁরাই যেন প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) লিখতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।
তিন দফা দাবিতে ২৬ আগস্ট বিকেল থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। পরদিন বুধবার বেলা ১১টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিলেন। একপর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় তাঁদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। ব্যবহার করা হয় জলকামান। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটার ঘটনাও ঘটে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। পরে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তিদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে।