১৯ দিন পর কেটেছে চুয়েটের অচলাবস্থা, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা
দীর্ঘ ১৯ দিন বন্ধ থাকার পর আবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) শুরু হয়েছে একাডেমিক কার্যক্রম। আজ রোববার থেকে সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেন।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১) । আহত হন জাকারিয়া হিমু (২১)। চুয়েটের কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির শাহ আমানত পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস।
দুর্ঘটনায় বিষয় জানাজানি হওয়ার পর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে চার দিন আন্দোলন করেন তাঁরা। আন্দোলন চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আগুন দেন শাহ আমানত পরিবহনের তিনটি বাসে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে গত ২৬ এপ্রিল ১৩৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে ৯ মে পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ সময় পূর্বঘোষিত হল ত্যাগের নির্দেশ পরিবর্তন করে শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়।
পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায় আমাদের দুই ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পরে আমরা ১০ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করি। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আমরা আন্দোলন স্থগিত করি। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের বেশ কিছু দাবি মেনে নিয়েছে। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা আজ থেকে ক্লাসে ফিরেছি। আশা করছি বাকি দাবিগুলো নিয়ে প্রশাসন দ্রুত কাজ শুরু করবে।’
এ বিষয়ে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘চুয়েট অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। এ জন্য আমাদের দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা প্রয়োজন ছিল। তাই ক্লাসে ফিরে আসায় আমি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়–সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় আমরা একটি সুন্দর একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করতে পারব।’